মধ্যপাড়া পাথর খনি লোকসান কাটিয়ে লাভে পথে

রুকুনুজ্জামান পার্বতীপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া পাথর খনি দেশের একমাত্র উৎপাদনশীল, বর্তমানে লোকসান কাটিয়ে লাভজনক হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মানীয়া-ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) কর্তৃক পাথর উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি পাথর বিক্রিও বেড়েছে।

খনি সূত্র মতে, বর্তমানে খনিতে প্রায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন পাথর মজুদ রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা। চলতি অর্থ বছরে ১ জুন পর্যন্ত ২৪৫ কোটি টাকার ৯ লক্ষ মেট্রিক টন পাথর বিক্রি হয়েছে। দেশের একমাত্র খনিটি ২০০৭ সালে বাণিজ্যিক ভাবে পাথর উৎপাদনে যায়। কিন্তু প্রতিদিন পাথর উত্তোলন হয় ৭শ’ থেকে ৮শ’ মেট্রিক টন। ফলে খনিটি লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। ২০১৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর সরকারের সাথে উন্মুক্ত দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি হয় বেলারুশের জেএসসি ট্রেস্ট সকটোস্ট্রয় ও জার্মানীয়া কর্পোরেশন লিমিটেড নিয়ে গঠিত জার্মানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে। জিটিসি ইউক্রেন, রাশিয়ান ও বেলারুশের সুদক্ষ মাইনিং বিশেষজ্ঞ দল ও দেশীয় শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে পাথর খনি থেকে দৈনিক সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে মধ্যপাড়া পাথর খনিটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করে। সেটি টানা ৫ বছর ধরে অব্যাহত রয়েছে। ফলে খনিটি লোকসান কাটিয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করে।

খনির একটি সুত্র জানায়, বর্তমান চুক্তিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পাথর উত্তোলন করছে জিটিসি। যার পরিমাণ এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ মেট্রিক টন। জিটিসির এই পাথর উত্তোলন এই ধারায় অব্যাহত থাকলে এবং উৎপাদন খরচ, ভ্যাট ও আয়কর প্রদান করে মজুতকৃত লাভের প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার পাথর বিক্রয় হলে পাথর খনিটি আরোও লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে। এমজিএমসিএল এর একটি সূত্র জানায়, বর্তমান পাথর বিক্রির পরিমাণ অনেক বেড়েছে এবং একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সফল আলোচনার মাধ্যমে পাথর বিক্রয়ে গতিশীলতা এসেছে।

খনি এলাকাবাসী জানায়, জিটিসি খনি এলাকায় মসজিদ নির্মাণ, মাদ্রাসা ও এতিম খানায় সহায়তা প্রদানসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। খনিতে কর্মরত শ্রমিকদের ছেলে মেয়েদের শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান এবংখনি এলাকার মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য চ্যারিটি হোম প্রতিষ্ঠা করেছে। সেখানে সপ্তাহে ৫ দিন ১ জন অভিজ্ঞ এমবিবিএস ডাক্তার বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরামর্শ সেবা প্রদান করছেন। জিটিসি সুত্র জানায়, জিটিসি খনিতে কাজ করতে এসেছে। করোনা মহামারির মধ্যে জীবনের ঝুকিঁ নিয়েও তারা খনিটিকে সচল রেখেছিল। কাজের চলমান স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে খনিটি বন্ধ হলে বেকার এবং কর্মহীন হয়ে পড়বে খনি শ্রমিকসহ এলাকার ২০ হাজার মানুষ। খনিটিকে এই পাথর উত্তোলন এই ধারায় অব্যাহত থাকলে পাথর খনিটি আরো লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *