দেশব্যাপী করোনার প্রকোপ বাড়লেও এইচএসসি পরীক্ষা পেছাবে না

সেখ রাসেল, সহকারী দপ্তর সম্পাদক, অনলাইন ডেস্ক:
দেশব্যাপী করোনার প্রকোপ বাড়লেও আপাতত আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষা পেছানো বা স্থগিতের কোনো চিন্তা করছে না শিক্ষা বোর্ডগুলো। তবে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় ব্যাপকভাবে সচেতনতায় জোর দেয়া হবে। গত কয়েকদিনে দেশে আবারো করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে আগামী ২৬ জুন শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা।

পরীক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শঙ্কা থাকলেও পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে শুরু করা হবে। সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ জন্য একাধিক বিকল্পও ভেবে রাখা হচ্ছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) তথ্যমতে, চলতি বছরের শুরু থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত সারা দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৩ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। অন্যদিকে একই সময়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৭০ জন। মারা গেছেন ২৮ জন। ২৬ জুন দেশের এক হাজার ৩১৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় বসতে যাচ্ছে। পরীক্ষা হবে দুই হাজার ৭৯৭ কেন্দ্রে। তত্ত্ববীয় পরীক্ষা শেষ হবে ১০ আগস্ট। এরপর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১১ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।

এর আগে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা: আবু জাফর বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা তরুণ। তাদের শুধু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই হবে। হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়িয়ে চলা ও মাস্ক পরলেই চলবে। গতকাল ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা পৃথকভাবে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, করোনা ও ডেঙ্গুতে সংক্রমণ নিয়ে শঙ্কা থাকলেও তারা নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরু করবেন। উচ্চমাধ্যমিকে বিষয় বেশি থাকায় পরীক্ষা নিতে সময় লাগে। নির্ধারিত সূচির বাইরে গিয়ে পরীক্ষার ক্ষেত্রে আপাতত কোনো বিকল্প হাতে নেই। এ জন্য পরীক্ষা শুরু করার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একাধিক বিকল্পও রাখা হচ্ছে। ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার বলেন, ডেঙ্গু এবং করোনা নিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি, এটা সত্য। অভিভাবকরাও আমাদের সাথে যোগাযোগ করে নানা শঙ্কার কথা জানাচ্ছেন। তবে আমাদের হাতে পরীক্ষা শুরু করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। অভিভাবকরা কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে দ্রুত পরীক্ষা শেষ করার দাবি জানিয়েছেন। তাদের ভাষ্য, সন্তানরা পরীক্ষার পুরো সিলেবাস শেষ করেছে। পরীক্ষার পাঠও রপ্ত। অটোপাস না দিয়ে দ্রুত পরীক্ষাগুলো নিলেই হবে।

এদিকে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানিয়েছেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণের যে হার, তাতে পরীক্ষা শুরু না করার মতো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। পরীক্ষার্থীদের মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হবে। আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা হবে। তিনি বলেন, আগামী ১৮ জুন কেন্দ্র সচিবদের সভা হবে। সেখানে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয় অবহিত করা হবে। তাছাড়া ১৫ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হবে। তখন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিধির সরকারি নির্দেশনা প্রচার করা হবে।

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের কর্তারা জানিয়েছেন, পরীক্ষা গ্রহণের সব প্রস্তুতি তারা শেষ করেছেন। এখনো সময় আছে। ১৫ জুন অফিস খোলার পর আন্তঃবোর্ড বৈঠক হবে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষার বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *