সশস্ত্র বাহিনী জনগণের আস্থা অর্জন করেছে: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যে কোনো দুঃসময়ে পাশে থেকে জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করেছে। ঢাকা সেনানিবাসে রোববার ‘প্রধানমন্ত্রীর দরবারে’ দেওয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। ঢাকা সেনানিবাসে নবনির্মিত বহুতল আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজি (এএফআইপি) এবং সেনাপ্রাঙ্গণ (আর্মি সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম) ভবন উদ্বোধনের পর তিনি দরবারে যোগ দেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার যে কোনো সেনাবাহিনীর জন্য সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস একান্তভাবে জরুরি। কারণ একটি দেশের সেনাবাহিনীর ওপর সেই দেশের জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস না থাকলে তারা (সেনাবাহিনী) কখনো রণাঙ্গনে বিজয় অর্জন করতে পারে না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ আমাদের সেনাবাহিনীর প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল। আমার প্রচেষ্টা ছিল সেই আস্থা ও বিশ্বাস পুনরুদ্ধার হয়। সেনাবাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে সেই আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ১৯৭৪ সালে যে প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেছিলেন। তারই ভিত্তিতে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। ফোর্সেস গোল বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা চাচ্ছি আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আধুনিক ও জ্ঞানসম্পন্নভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।’

সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্বে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। এখন আমাদের লক্ষ্য সশস্ত্র বাহিনীর ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করা।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যে অবদান রাখছে তাতে প্রত্যেকটি দেশ এর ভূয়সী প্রশংসা করে থাকে। কাজেই সেটাকে আরও উন্নত করাই আমাদের লক্ষ্য।’

প্রধানমন্ত্রী ফিতা কেটে ১৪তলা বিশিষ্ট এএফআইপি ভবনে প্রবেশ করেন এবং নতুন ভবনে স্থাপিত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পরিদর্শন করেন। এএফআইপি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল ডা. নিশাত জুবাইদা প্রধানমন্ত্রীর সামনে নতুন ভবনের মূল বৈশিষ্ট্য ও সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরেন।

এএফআইপি ভবনটি আধুনিক পরীক্ষাগারে সজ্জিত যেখানে আন্তর্জাতিকমানের পরিষেবা নিশ্চিত করার জন্য পরবর্তী প্রজন্মের অনুক্রম, স্বয়ংক্রিয় রোগজীবাণু শনাক্তকরণ ব্যবস্থা, ট্রান্সমিশন ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ এবং মাল্টি-হেডেড মাইক্রোস্কোপ ইনস্টল করা হয়েছে।

২০১৯ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) প্যাথলজি সেবার ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ‘সশস্ত্র বাহিনী ইনস্টিটিউট অব প্যাথলজির সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন করে। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের নির্ধারিত সময়ের আগেই বাস্তবায়ন হলো।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রাঙ্গণের উদ্বোধন করেন এবং ফিতা কেটে নতুন ভবনে প্রবেশ করেন। সেনাপ্রাঙ্গণ ভবন গুরুত্বপূর্ণ সভা, সেমিনার এবং সামাজিক অনুষ্ঠানের মতো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য নির্মিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সেনাপ্রাঙ্গণে একটি গাছের চারাও রোপণ করেন। এ সময় সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *