মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন সৌমিত্র: প্রধানমন্ত্রী

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: পশ্চিমবঙ্গের কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় আপন সৃষ্টিশীল কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।রবিবার (১৫ নভেম্বর) এক শোকবার্তায় ফেলুদা’খ্যাত প্রখ্যাত এই অভিনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।শোকবার্তায় তিনি বলেন, প্রতিভাবান এই শিল্পীর মৃত্যুতৈ অভিনয় জগতে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হলো। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় তাঁর সৃষ্টিশীল কর্মের মধ্য দিয়ে মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।’দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার কারণেই সব রকম চিকিৎসার উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে।অভিনয় দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও একাধারে অভিনেতা, আবৃত্তিকার ও কবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাচর্চা, রবীন্দ্রপাঠ, সম্পাদনা, নাট্যসংগঠন ছিল তার বৈচিত্র্যের নানা দিক। সত্যজিত রায়ের ‘অপু’ অভিনেতা সৌমিত্রের সময় আজ চিরতরে থেমে গেলো।১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম। কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট সিটি কলেজে সাহিত্য নিয়ে পড়ালেখা করা সৌমিত্র ১৯৫৯ সালে প্রথম সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসার’ ছবিতে অভিনয় করেন।সত্যজিত রায়ের ৩৪টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৪টিতেই অভিনয় করেছেন সৌমিত্র। সিনেমা ছাড়াও নাটক ও যাত্রায় অভিনয় এবং লেখালেখি ও আবৃত্তিতেও খ্যাতি রয়েছে গুণী এই শিল্পীর।সৌমিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলোর মধ্যে ‘অপুর সংসার’, ‘সোনার কেল্লা’, ‘জয় বাবা ফেলুনাথ’ (ফেলুদা চরিত্র), ‘দেবী’, ‘ফ্ল্যাট নং ৬০৯’, ‘চারুলতা’, ‘সাত পাকে বাঁধা’, ‘বাক্স বদল’, ‘কাপুরুষ’, ‘বেলা শেষে’, ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘দেবী’, ‘ঝিন্দের বন্দি’, ‘স্বরলিপি’, ‘সমাপ্তি তিনকন্যা’, ‘কিনু গোয়ালার গলি’, ‘আগুন’, ‘বেনারসি’, ‘অভিযান’, ‘শেষ প্রহর’, ‘কাচ কাটা হীরে’, ‘অশনি সংকেত’ ও ‘প্রাক্তন’ অন্যতম।অসাধারণ অভিনয়ের জন্য পঞ্চম দশকে ‘সেরা অভিনেতা’ বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও বাঘিনী (১৯৬৮), অগ্নিসংকেত (১৯৮৮) এবং ক্রান্তিকাল (২০০৫) ছবিতে অভিনয়ের জন্য একাধিক বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন ফেলুদা খ্যাত এ অভিনেতা।অভিনয়ের বাইরে কবি ও আবৃত্তিকার হিসেবে খ্যাতিমান সৌমিত্র ২০০৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রীয় সম্মান পদ্মভূষণ পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, সঙ্গীত নাটক একাডেমী পুরস্কার, ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার ও ফ্রান্সের ‘লেজিয়ঁ দ্য নর’ (২০১৮) এর মতো দেশ-বিদেশের অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এপার-ওপার বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয় এই কিংবদন্তি অভিনেতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *