নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধর, হাজী সেলিমের ছেলে গ্রেফতার
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধর ও হত্যার হুমকির ঘটনায় হওয়া মামলার এজাহারভূক্ত আসামি হাজী সেলিমের ছেলে ৩০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিমকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।দুপুরে দেবীদাস ঘাট লেন এলাকায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে র্যাবের একটি টিম হাজি সেলিমের বাজায় তল্লাসী জালিয়ে ইরফান সেলিমকে গ্রেফতার করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত র্যাব ইরফান সেলিমকে নিয়ে এখনো তল্লাসী চালাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে অভিযান শেষে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে বলে জানিয়েছে র্যাব ।এর আগে হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাতের ওই ঘটনায় নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খান সোমবার ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা করেছেন। মিজানুর রহমানও ওই মামলার এজহারভূক্ত আসামি।মামলায় আসামীরা হলেন, হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ এরফান সেলিম, প্রোটকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।তাদের মধ্যে গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রমনার ডিসি সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত সব আসামিকে ধরতে অভিযান চলছে। এছাড়াও ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।রবিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে ঢাকা-৭ আসনের এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়। রাতে এ ঘটনায় জিডি হলেও আজ (সোমবার) ভোরে মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়।মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তিনি ও তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ধাক্কা সামলে সড়কের পাশে মোটরসাইকেল থেকে নেমে গাড়িটির সামনে দাঁড়ান ওয়াসিম। নিজের পরিচয় দেন। তখন গাড়ি থেকে আসামিরা একসঙ্গে বলতে থাকেন, ‘তোর নৌবাহিনী/সেনাবাহিনী বের করতেছি, তোর লেফটেন্যান্ট/ক্যাপ্টেন বের করতেছি। তোকে এখনি মেরে ফেলব’ বলে কিল-ঘুষি মারেন এবং আমার স্ত্রীকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।‘তারা আমাকে মারধর করে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যায়। পরে আমার স্ত্রী, স্থানীয় জনতা এবং পাশে ডিউটিরত ধানমন্ডি থানার ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে উদ্ধার করে আনোয়ার খান মডেল হাসপাতালে নিয়ে যায়।’মামলায় মোট পাঁচটি ফৌজদারি অপরাধের ধারার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অপরাধগুলো হলো- দণ্ডবিধি ১৪৩ অনুযায়ী বেআইনি সমাবেশের সদস্য হয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধমূলকভাবে বল প্রয়োগ করা, ৩৪১ অনুযায়ী কোনো ব্যক্তকে অবৈধভাবে নিয়ন্ত্রণ করা, ৩৩২ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার কাজে বাধাদানের উদ্দেশ্যে আহত করা, ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তার ওপর বল প্রয়োগ করা এবং ৫০৬ ধারায় প্রাণনাশের হুমকি দেয়ার।মামলার এজাহারে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ এরফান সেলিম, তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ, হাজি সেলিমের মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এ বি সিদ্দিক দিপু এবং গাড়িচালক মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো দুই-তিনজনকে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।