৪১দিন পর ফিরছে মরদেহ : দিল্লিতে চলন্ত ট্রেনে-বাংলাদেশী নারীকে নির্যাতনে হত্যা
বেনাপোল প্রতিনিধি : আযমীর শরিফ যাওয়া হলো না লাশ হয়ে বাড়ীতে ফিরল ভারতের দিল্লীতে চলন্ত ট্রেনে নির্যাতনে নিহত নার্গিস খাতুন(৩২)। সে খুলনা নিউ মার্কেট এলাকার আবুল কালামের স্ত্রী। যার পাসপোর্ট নং-বিসি-০১২৩৭০৭। নিহতের পরিবারের অভিযোগ তাকে শারীরিক নির্যাতন(ধর্ষন) শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে দেয় ট্রেন কর্মচারীরা। আগ্রা মেডিকেল মর্গে রাখা হয় লাশটি। দীর্ঘ ৪১দিন পর হতভাগ্য নারীর লাশ বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠাচ্ছেন ভারত সরকার।
গত ৯মার্চ ২০১৫ তারিখে বেনাপোল পেট্রাপোল স্থলপথে পাসপোর্ট যোগে ভারতের তীর্থস্থান খাজা বাবা মঈনুদ্দিন চিস্তী রঃ রওজা আযমীর শরীফের উদ্দেশ্যে রওনা হয় নার্গিস। সাথে ছিলেন তার মা খুলনা মহানগর সোনাডাঙ্গার ৩/১ কেডিএ এ্যাপ্রোচ এলাকার শাহবুদ্দিন আলীর স্ত্রী মোসাঃ ননীবালা(আনোয়ারা বেগম) এবং তার কন্যা কাকলী(৯)। কলিকাতা হাবড়া থেকে ট্রেনে ওঠে তারা। ১০ মার্চ রাত সাড়ে তিনটার দিকে দিল্লী কানপুর ষ্টেশনে নেমে পড়ে তারা তিন জন। ট্রেনে থাকা ল্যাগেজ নিতে যেয়েই নার্গিস আর ফিরতে পারেনি। লাল পতাকা বাহি ট্রেনের বগিতে থাকা গার্ডরা তাকে কাপড় দিয়ে মুখ চেপে বগিতে তুলে ট্রেনটি ছেড়ে দেয়। এসময় তার মা ও কন্যা চিৎকার দেয় ওকে বাঁচান ওকে ছেড়ে দেন। কেউ রাখেনি তাদের কথা শোনেনি চিৎকার। আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। ১৬ তারিখে অবৈধ পথে তার অন্ধ মা ও কন্যাকে বাংলাদেশে পাঠায় সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা।
১৯ মার্চ তারিখে খুলনা সোনাডাঙ্গা থানায় ক্ষতিপূরন সহ লাশ ফেরতের দাবীতে জিডি করেন ননি বেগম। ১৯মার্চ খুলনা মেট্রোপলিটন বিশেষ শাখার পুলিশ সুপারের দফতর-৪৬/৯৩স্মারকে জানায় নতুন দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে বাংলাদেশী নারীর লাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ৩০মে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়,আইন মন্ত্রনালয়,হাইকমিশন সহ বিভিন্ন দফতরে কপির অনুলিপি পাঠানো হয়। খুলনা বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবরেও আবেদন করা হয়। আগ্রা মেডিকেল মর্গ থেকে ফোনে নিহতের পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের ৫লাখ টাকা চাওয়া হয় বলে জানায়, লাশ নিতে আসা নার্গিসের চাচি রাহেলা বেগম জানান । ঘটনার বর্ননা দিতে যেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতের অন্ধ মা আনোয়ারা ও কন্যা কাকলী। আর্তনাদ করে অন্ধ মা বলেন কি দোষ ছিল তার মেয়ের। সে ভারতে যেয়ে কেন ফিরল লাশ হয়ে। মানবধিকার সংগঠন সহ সরকারের কাছে বিচার চান তিনি।
নিহতের ফুফাতো ভাই খুলনার মিলন হোসেন বলেন, তাকে দিল্লিতে ট্রেনের মধ্যেই শারীরিক নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে ট্রেনের শ্রমিকরা। বিচার চান তারা।
পোর্ট থানার ওসি অপূর্ব হাসান ও বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ওসি আসলাম খান জানান, দু দেশের স্বরাষ্ট্র, হাইকমিশনার ও সংশ্লিষ্ট দফতরের চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে দীর্ঘ ৪১ দিন পর বাংলাদেশে এসেছে নার্গিসের লাশটি। আজ সকালে তাকে ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ আমােেদর কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমরা তাদের অভিভাবকের কাছে লাশ হস্তান্তর করেছি।