কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা


সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে কিস্তির টাকা দিতে না পেরে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে জরিনা খাতুন (২৮) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন।শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে গুরুতর আহত জরিনা খাতুনকে ঢাকা নেয়ার পথে মারা যায়। নিহত জরিনা খাতুন (২৮) উপজেলার পশ্চিম খাসকাউলিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষি শ্রমিক আব্দুর রউফের স্ত্রী। তাদের পরিবারে শিশুসহ ৫ সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।স্থানীয়রা জানান, পরিবারের অভাব অনটনের কারণে জরিনা খাতুন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন। টাঙ্গাইলের নাগরপুরের ভাড়রা ইউনিয়ন শাখা থেকে চলতি দু’দফায় ওই টাকা উত্তোলন করেন। নিয়মিত সাড়ে ৭শ টাকা সপ্তাহে কিস্তি দিয়ে আসছিল। হঠাৎ সংসার চালাতে নানা অনটনে পড়ে তার পরিবার। এমন অবস্থায় কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি গৃহবধূর।রবিবার ছিল সপ্তাহিক কিস্তির টাকা দেবার সময়। অভাবের কথা শুনে এনজিও গ্রামীণ ব্যাংকের মাঠ কর্মীরা আগে থেকেই টাকা দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ছিল গৃহবধূ জরিনা। কোনভাবেই কিস্তির টাকা সংগ্রহ করতে পারছিলেন না তিনি। তাই আগের দিন শনিবার সকালে কোন উপায় না বুঝে নিজের ঘর আটকিয়ে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। এতে শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে যায়। তখন স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে চৌহালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে যায়। সেখানে ডাক্তাররা দগ্ধ গৃহবধূকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেন। ঢাকায় নেয়ার পথে সে মারা যায়।জরিনার স্বামী আব্দুর রউফ জানান, আমাদের অভাব দেখে কিস্তির টাকার জন্য গ্রামীণ ব্যংকের কর্মীরা নানাভাবে আগে থেকেই চাপ দিতো। তবে অভাবের কারণে টাকা গোছাতে না পেরে আমার স্ত্রী শরীরে কোরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করে।এ বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক ভাড়রা শাখা ম্যানেজার রঞ্জু আহমেদ জানান, আমরা টাকার জন্য আসলে অতোটা চাপ দেইনি। জরিনার মৃত্যুর কথা শুনে আমরা তার বাড়ি গিয়ে পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দিয়েছি। পাওনা টাকা মওকুপসহ বীমার টাকা পরিবারের কাছে হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে।চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *