বেনাপোল বন্দরের অধিকাংশ ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো, স্থবির পণ্য খালাস প্রক্রিয়া
বেনাপোল প্রতিনিধি: দেশের বৃহত্তম বেনাপোল স্থলবন্দরের অধিকাংশ ক্রেন ও ফর্কলিফট অকেজো হওয়ায় হঠাৎ স্থবির হয়ে পড়েছে বন্দরের ভারী মালামাল খালাস প্রক্রিয়া। সময়মত পণ্য খালাস করতে না পারায় বন্দরে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ পণ্যজট। পণ্য লোড আনলোডের অপেক্ষায় ভারত ও বাংলাদেশী ট্রাক বন্দরে দাঁড়িয়ে আছে দিনের পর দিন। লোড আনলোডের অনুমতি মিললেও ক্রেন ও ফর্কলিফট বিকল থাকায় তা হচ্ছে না। দেশের সিংহভাগ শিল্প-কলকারখানা, গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ ও বিভিন্ন প্রকল্পের বেশির ভাগ মেশিনারিজ আমদানি হয় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে। ক্রেন ও ফর্কলিফট ছাড়া এসব ভারী পণ্য বন্দরে আনলোড ও বন্দর থেকে খালাস নেওয়া সম্ভব নয়। ২০১০ সালের ২১ মার্চ বেনাপোল বন্দরের ভারী পণ্য ওঠানো-নামানোর জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঢাকা মহাখালীর মেসার্স এসআইএস (সীস) লজিস্টিক্যাল সিস্টেমের (জেভি) পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি হয়। ওই বছরের ১ আগস্ট থেকে তারা বেনাপোল স্থলবন্দরে বেসরকারী কার্গো হ্যান্ডলিং এর দায়িত্ব পায়। তারা বন্দরে ৬ টি ফর্কলিফট ও ৫টি ক্রেণ দিয়ে মালামাল ওঠা-নামার কাজ শুরুর পর ওই বছরের ১০ নভেম্বর আরো ৬টি নতুন ফর্কলিফট নিয়ে আসে। কয়েকদিন কাজ করার পর এসব ফর্কলিফট ও ক্রেণ অকেজো হওয়া শুরু করে। চুক্তি অনুযায়ী ৫টি বিভিন্ন ধারন ক্ষমতা ক্রেন ও ১১টি ফর্কলিফট দিয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ৬টি ক্রেন ও ৯টি ফর্কলিফট অকেজো হয়ে পড়ে আছে। বাকী একটি ক্রেণ ও ২টি ফর্কলিফট দিয়ে কাজ করা হলেও সেটি প্রায় সময় অকেজো হয়ে থাকে। ঠিকাদার কোম্পানির দায়িত্বহীনতার কারণে বেনাপোল স্থল বন্দরের সকল প্রকার ভারি পণ্য লোড-আনলোড ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে বন্দরের শ্রমিকরা অলস সময় কাটাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা পড়েছে চরম দুভোর্গের মধ্যে। ক্রেণ ফর্কটিফট সমস্যার কারণে সোমবার সকালে ঠিকাদার প্রতিষ্টানের কর্মকর্তার সাথে ব্যবসায়ীদের দ্বন্দ বেধে যায়। জানা গেছে, ২০১৬ সালে বেনাপোল স্থলবন্দরে বেসরকারি কার্গো হ্যান্ডলিংয়ে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের জন্য দরপত্র আহবান করা হলে, আগের হ্যান্ডলিং ঠিকাদার মেসার্স এসআইএস (সিস) লজিস্টিক্যাল সিস্টেম (জেভি) উচ্চ আদালতে রিট করে।ফলে বন্ধ হয়ে যায় দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া। এমন পরিস্থিতিতে আগের কোম্পানি তার কাজ চালাচ্ছে জোড়াতালি দিয়ে। যার কারণে এই পথে পণ্য আমদানিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে বন্দর ব্যবহারকারীসহ ব্যবসায়ীরা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বেনাপোল প্রতিনিধি হাফিজুর রহমান জানান, ইঞ্জিনের বিষয়তো, মাঝেমধ্যে সমস্যা হতে পারে। আমরা দ্রুত সব ক্রেন ঠিক করে দিচ্ছি। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা জানান, ৩৮ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার বন্দরে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টন পণ্য উঠানো-নামানো হয়। এতে ন্যূনতম সাতটি ক্রেন ও ৩০টি ফর্কলিফট প্রয়োজন। সেখানে একটি ক্রেন ও ২টি ফর্কলিফট দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। ফলে সেগুলো প্রায় সময় বিকল হয়ে পড়ছে। বেনাপোল স্থলবন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম,বারবার তাগিদ দিলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাড়া দিচ্ছে না। তাছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।