পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান প্রশ্নপত্রে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা, অতঃপর…

ডেস্ক রিপোর্ট : মাদারীপুরের রাজৈরে একটি প্রাইমারি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র দিয়ে তৃতীয় শ্রেণির বিজ্ঞান পরীক্ষা গ্রহণ করেছেন সংশিষ্ট শিক্ষকরা।

বুধবার সকালে উপজেলার বৌলগ্রাম এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ‘৪১নং মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে’ তৃতীয় শ্রেণির মূল্যায়ন পরীক্ষায় এ অসম্ভব ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে তদন্ত করে সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তপা বিশ্বাস।

জেলা শিক্ষা অফিসার তাপস পাল জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় ইতোমধ্যে বৃহস্পতিবার বিকালে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট প্রধান শিক্ষক মো. টিপু সুলতান, সহকারী শিক্ষক কাজী শাহাজুল ইসলাম ও শিক্ষিকা মেরিনা আক্তারকে শোকজ করা হয়েছে এবং নতুন প্রশ্নপত্র তৈরি করে পুনরায় ভুক্তভোগী ৩য় ও ৫ম শ্রেণির ওই শিশু শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, রাজৈর উপজেলার বৌলগ্রামের ৪১নং মাচরং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন (ফাইনাল) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণি এবং দুপুর দেড়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

বুধবার তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। সকালে তৃতীয় শ্রেণির ২৩ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে এলে তাদের হাতে পঞ্চম শ্রেণির বিজ্ঞান প্রশ্নপত্র দেন শিক্ষক কাজী শাহাজুল। এর পর পরীক্ষা চলে দীর্ঘ ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এত দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও ভুলটি কারও চোখে ধরা পড়েনি। পরে দুপুরে পঞ্চম শ্রেণির ২৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এলে বিজ্ঞান বিষয়ের প্রশ্নপত্র উলটপালট হওয়ার ঘটনা ধরা পড়ে। উপায়ান্ত না দেখে একপর্যায়ে তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওই প্রশ্নপত্র ফিরিয়ে এনে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা গ্রহণ করেন শিক্ষকরা। পরে এ ঘটনায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন অভিভাবকরা।

ভুক্তভোগী তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষার্থীরা জানায়, আমাদের যে প্রশ্ন দিছে তাতে কোনো কিছুই কমন পড়ে নাই। তাই আমাদের পরীক্ষা ভালো হয় নাই। আমরা পরীক্ষা দিয়ে চলে যাওয়ার পর আমাদের বাড়ি গিয়ে প্রশ্নপত্র ফেরত এনেছেন রবিউল ভাই (স্কুলের দপ্তরি)।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক কাজী শাহাজুল বলেন, প্রধান শিক্ষক টিপু সুলতান আমার হাতে যেভাবে প্রশ্নপত্র দিয়েছেন আমি সেইভাবে এনেই পরীক্ষার্থীদের হাতে দিয়েছি। কিন্তু প্রশ্নপত্র চেক করে দেখি নাই।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক টিপু সুলতান বলেন, বিজ্ঞান পরীক্ষার দিন আমার খালা মারা যাওয়ায় তড়িঘড়ি করে সহকারী শিক্ষকদের কাছে প্রশ্নপত্র দিয়ে চলে যাই। ভুলের বিষয়টি আমি বিকালে জানতে পারি। তৃতীয় শ্রেণির প্রশ্নের জায়গায় পঞ্চম শ্রেণির প্রশ্নপত্র দেওয়ায় আমি দুঃখিত। একই জায়গায় দুটি শ্রেণির প্রশ্নপত্র থাকায় আমি বিষয়টি খেয়াল করিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *