একজন পুলিশ সার্জেন্ট- যিনি একাই একশ
স্পেশাল রিপোর্টার(চট্টগ্রাম) মুহাম্মদ রেজাউল করিম: সকাল ১০টা চট্টগ্রাম মহানগরীর ব্যাস্ততম আগ্রাবাদ এলাকার আক্তারুজ্জামান সেন্টারের সামনে দিয়ে যেতেই চোখে পড়ল বীরদর্পে এদিক থেকে ওদিক ছুটে চলা দায়িত্ববান পুলিশ সার্জেন্ট এর দিকে। তিনি সমহিমায় পালন করে যাচ্ছেন সরকারী মহান দায়িত্ব। কারো দিকে তাকানোর ফুসরত নেই। কি সিএনজি, কি রিক্সা, কি বাস-ট্রাক, টেম্পু চৌরাস্তার মোড় থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন একাগ্রচিত্তে চলমান অন্যান্য গাড়ি ও পথচারীকে যান যটের ভোগান্তি থেকে মুক্ত করতে। আমি দাঁড়িয়ে ২০-২৫ মিনিট খুব গভীরভাবে দেখলাম তার দায়িত্ব পালনের সুন্দর দৃশ্য। যাকে যেভাবে কথা বলে বুঝিয়ে মানানো যায় রাজপথ যানজট মুক্ত করা যায়, তিনি সেভাবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন অবলীলাক্রমে। লক্ষ করলাম কারো বাহবা পাওয়ার জন্য নয়, নিতান্তই নিজের দায়িত্ববোধ থেকেই পালন করে যাচ্ছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট মাজহারুল ইসলাম। আমার পরিচয় না দিয়ে জানতে চাইলাম কর্তব্যের বিষয়ে, আমাকে কোন উত্তর না দিয়েই আবার দৌড়ে গেলেন রাস্তায় অবৈধ ভাবে দাঁড়ানো একটি বাসের দিকে, বিনয়ী নির্দেশ করলেন নির্ধারিত স্থানে দাঁড়াতে বাসটি ও সরে গেল। যে সময়ে বাদামতলী মোড়ে প্রচন্ড রকম ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ঠিক তেমনি একটি ব্যস্ততম সময়ে নিজগুনে রাস্তা একদম শৃঙ্খলিত রেখে যাত্রী এবং পথচারীদেরকে ভোগান্তিমুক্ত পরিবেশ উপহার দিয়ে গেলেন তিনি। আমি তার দায়িত্ব পালনের দৃশ্য দেখে অভিভূত হলাম। আবার ডেকে পুরো নাম জিজ্ঞেস করলাম, হাসিমুখে আমার পরিচয় জানতে চাইলেন, আমি পরিচয় গোপন রেখে একটু ক্ষেপানোর কৌশল নিয়ে জানতে চাইলাম গ্রামের বাড়ি কোথায়? স্বভাব সুলভ হাসি মাখা মুখে উত্তর দিলেন নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। আবার প্রশ্ন করলাম পুলিশে আসছেন কত সনে? এবার আামার কাঁধে হাত রেখে বললেন ২০১৫-তে। তিনি আমাকে বললেন আপনি কি করেন ভাইয়া? সাংবাদিক বলতেই বললেন আমার কাছে কিছু জানতে চাইলে আমার টিআই স্যারের অনুমতি নিতে হবে। ছুটে গেলাম টিআইয়ের পুলিশ বক্সে সালাম দিয়ে জানতে চাইলাম সার্জেন্ট মাজহারুল ইসলামের কর্ম ও ব্যক্তিগত ব্যাপারে। টিআই (এডমিন) বিপ্লব কুমার পাল বললেন খুবই এক্টিভ এবং বিচক্ষণ অফিসার অনেক ভালো- অনেক দায়িত্বশীল। টিআই সাহেবের কথায় আমার আগ্রহ হলো ওনাকে নিয়ে কিছু লেখার, রোদ-বৃষ্টিতে যার পর নাই পরিশ্রম করা এই ট্রাফিক পুলিশ ভাইদের প্রতি স্যালুট। অনেক সোনার ছেলেরা এই পেশায় গায়ের রং, রূপ, সৌন্দর্য্যকে বিসর্জন দিয়ে অকাতরে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন দেশ ও জাতির সেবায়, তারা ও মানুষ ভুলত্রুটি তাদের ও হতেই পারে। তাই ঠুনকো কোন ভুলের জন্য আমরা যেন তাদেরকে ভুল না বুঝে বন্ধু হিসেবে গ্রহন করি, ট্রাফিক আইন মেনে তাদেরকে সহযোগিতা করি। পরিশেষে ম্যানেজমেন্টে অনার্স মাষ্টার্স পাশ করা এই নির্ভিক নিরহংকার পুলিশ সার্জেন্ট এর মত সকল অফিসারদের প্রতি রইল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।