মধ্যপাড়া কঠিন শিলা পাথর খনি থেকে মাসে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের রেকর্ড ।
মোঃ আফজাল হোসেন ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দেশের উত্তর অঞ্চলের দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া কঠিন শিলা পাথর খনিতে গত মার্চ মাসে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করে রেকর্ড গড়েছেন খনির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দিনাজপুরের মধ্যপাড়া কঠিন শিলা পাথর খনির পাথর উত্তোলন কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জিটিসি মার্চ মাসে এক দিনে তিন শিফটে সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৪৮ মে.টন পাথর উত্তোলন করে খনির উৎপাদন ইতিহাসে একদিনে নিদ্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন ঐ কোম্পানী । একই সাথে মাসিক উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গত মার্চ মাসে সাপ্তাহিক ও সরকারী ছুটির দিন ব্যাতিত সর্বোচ্চ প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করেছেন জিটিসি। খনি সুত্রে জানা গেছে, দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথর খনি ২০০৭ সাল থেকে বানিজ্যিকভাবে পাথর উত্তোলনের যাওয়ার পর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় উৎপাদন তাদের কাছে ছিল অধরা। খনি কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় তিন শিফটে পাথর উত্তোলন শুরুই করতে পারেনি। এছাড়া ওই সময়কালে দৈনিক সর্বোচ্চ ৫০০/৭০০ টন করে মাসিক উৎপাদন ছিল প্রায় ২০/২৫ হাজার মেট্রিক টন। ফলে খনিটি প্রায় শত কোটি টাকার উপরে লোকসানে পড়ে বন্ধের উপক্রম হয়েছিল বলে জানাযায়। গত ২০১৩ ইং সালে জার্মাানীয়া-ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি) এর সাথে পাথর খনির চুক্তির পর থেকে জিটিসি খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনকে গুরুত্বের সাথে নিয়ে পাথর উত্তোলন শুরু করে। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে তিনি শিফটে পাথর উত্তোলন শুরু করে খনি থেকে মাসিক লক্ষাধিক মেট্রিক টন পাথর উত্তোলন করা যে সম্ভব সেই সম্ভবনার দ্বার খুলে দেয় এই কোম্পানী। তবে খনি উন্নয়ন ও উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় বিদেশী মেশিনারিজ ও যন্ত্রাংশ পাথর খনি কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে আমদানী করার ব্যবস্থা করতে না পারায় মাঝপথে প্রায় ২ বছর খনির উন্নয়ন ও উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হয় জিটিসি। জিটিসি সুত্র জানায়, পাথর খনিতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি পাথর উত্তোলন বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে দৈনিক পাথর উত্তোলন বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্তমানে মাসিক পাথর উত্তোলন ১ লক্ষ ২৫ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে গত মার্চ মাসে ছুটির দিন ব্যতিত পাথর উত্তোলন করা হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৮ হাজার মেট্রিক টন। ২০১৭ সালে জিটিসি’র খনির উন্নয়ন এবং উৎপাদনের জন্য বিদেশী খনি বিশেষজ্ঞদের চাহিদা মাফিক বিদেশী মেশিনারিজ স্থাপনের ফলে পাথর উত্তোলন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে সে ধারাবাহিকতা বজায় আছে। মসিক উৎপাদনের এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌছানোর ফলে জিটিসি তাদের অধীনে কর্মরত প্রায় সাড়ে ৭ শত খনি শ্রমিকদের বেতন ও ওভার টাইমের সঙ্গে উৎপাদন বোনাসও প্রদান করছে। মধ্যপাড়া কঠিন শিলার পাথর এখন ব্যাপক চাহিদা। বিদেশ থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করলে দেশীও পাথর সরকারি বে-সরকারি নির্মাণ কাজে ব্যবহার করলে অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে দেশ। মধ্যপাড়া পাথর খনি থেকে উৎপাদনের এই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে জিটিসি অঙ্গীকারাবদ্ধ এবং দেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে অংশীদার হয়ে অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে খনিটিকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলে এলাকার অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।