রাজশাহীর তানোরে মুন্ডুমালা সোনালী ব্যাংক দূর্নীতির আখড়া


তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে সোনালী ব্যাংক মুন্ডুমালা হাট শাখা অনিয়ম ও দূর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়ে উঠেছে। কাজে ক্রটি থাক বা নাই থাক এখানে কর্মরত একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী নানা অজুহাতে গ্রাহকের কাছে থেকে আনুঃপাতিক হারে অনৈতিক সুবিধা আদায় করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিদেশ থেকে গ্রাহকের টাকা আসলে সেই দিন দেয়া হয় না। আবার ব্যবসায়ীরা ৫০ হাজার বা এক লাখ টাকা উত্তোলন করতে গেলে একদিন আগে কেন জানানো হয়নি এই অজুহাতে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে সোনালী ব্যাংক মুন্ডুমালা শাখার ব্যবস্থাপকের (ম্যানেজার) বিরুদ্ধে। সোনালী ব্যাংক মুন্ডুমালা হাট শাখায় কারেন্ট একাউন্ট নম্বর ৪২৯ নিয়মিত লেনদেন করেন সামসুজোহা নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি জানান, টাকা জমা দিতে ঝামেলা হয় না, কিন্তু উত্তোলন করতেই গিয়ে নানা হয়রানী হতে হয়। হঠাৎ করে ব্যাংকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা তুলতে গেলেই ব্যাংক ম্যানেজার অসদাচারণ করেন। অপেক্ষায় রাখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তিনি আরো জানান, ব্যবসার কাজে কখন হঠাৎ করে টাকা দরকার হয় বলা যায় না। তাই আগে থেকে টাকা তোলার কথা বলা সম্ভব হয় না। ব্যাংকের ক্যাশে টাকা থাকলেও আগে না জানানোর কারণে ম্যানেজার গ্রাহকদের টাকা দিতে চায় না। মুন্ডুমালা গ্রামের ইদ্দ্রিস আলী নামের এক গ্রাহক অভিযোগ করেন, তার একাউন্ট সোনালী ব্যাংক তানোর শাখায়। গত মাসে মুন্ডুমালা হাট শাখায় অনলাইনে টাকা উত্তোলন করতে এসে ব্যাংকের অন্য কর্মচারীরা ব্যস্ত থাকায় ম্যানেজারের কাছে যান চেক নিয়ে। প্রায় ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর ম্যানেজার বাম হাতে চেক গ্রহন করে পাশাপাশি তার সঙ্গে খারাপ আচরণও করেন। সাহাবুর রহমান একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। তার এ শাখায় একাউন্ট নম্বর ১১৭৪। তিনি জানান, এ ব্যাংকে এলাকার প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ শিক্ষক তাদের বেতন উত্তোলন করে থাকেন। শিক্ষকদের সঙ্গে ভাল আচরণ করেন না ম্যানেজার এমন কি অনেক সময় আগে টাকা নিতে হলে কিছু টাকা কেটে নেয়া হয়। অধিককাংশ শিক্ষক বেতন তুলে অন্য ব্যাংকে নিয়মিত লেনদেন করেন। সম্প্রতি এই শাখায় নতুন সেভিংস একাউন্ট খুলতে এসে ঘুরে গেছেন আব্দুল মান্নান নামের এক গ্রাহক। তার বাড়ি ডাঙ্গাপাড়া এলাকায়। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান,বাড়িতে থাকা একটি গরু বিক্রি করা ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংকে রাখার জন্য এসেছিলেন। নতুন একাউন্ট করা যাবতীয় কাগজ পত্র সঙ্গে এনেছিলেন। কিন্ত ম্যানেজার নিজের ব্যস্ততা দেখিয়ে একাউন্ট হবে না বলে ফিরিয়ে দেন। পরে বেসরকারী একটি ব্যাংকে তার আমনতের টাকাগুলো রেখে বাড়িতে যান বলে জানান তিনি। নাম প্রকাশ না করা শর্তে ব্যাংকের একজন স্টাফ জানান, ম্যানেজার এ ব্যাংকে যোগদানের পর থেকে গ্রাহকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন না। নিজেকে অনেক বড় কর্মকর্তা মনে করে গ্রাহকদের সঙ্গে ঠিকমত কথা বলতে চান না। গ্রাহকেরা তার কাছে কোন কাজ নিয়ে গেলে তাদের সঙ্গে উচ্চস্বরে কথা বলেন। এতে অনেক গ্রাহকই তার উপর ক্ষুব্ধ হয়ে ব্যাংকে লেনদেন আর করছে না। এসব বিষয়ে সোনালী ব্যাংক মুন্ডুমালা হাট শাখার ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, এটি সরকারি ব্যাংক কোন গ্রাহক থাকলো বা না থাকলো দেখার বিষয় আমার নয়। তারা এখানে লেনদেন না করলে আমরা তাদের তো আর ধরে রাখতে পারবো না। তবে আমি গ্রাহকের সঙ্গে অসদাচারণ করি এটা সত্য নয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *