নীলফামারীর ডিমলায় ওজনে সার কম দেওয়ার অভিযোগে :: অবরুদ্ধ ডিলার মুক্ত ॥এলাকাজুড়ে তোলপাড়


গোলাম রাব্বানী ভ্রামমান নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়নের ঠাকুরগঞ্জ বাজারে সার ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে স্থানীয় জনতার কাছে অবরুদ্ধ এক সারের ডিলার দীর্ঘ ৬ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে অজানা কারনে মুক্ত হয়েছেন।তবে ওই ডিলারকে ওজনে কম দেবার অপরাধে কোনো অর্থদন্ড,কারাদন্ড,গুদাম সিলগালা,লাইসেন্স বাতিল সহ তার বিরুদ্ধে কোনো রকমের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন না করেই তাকে ছেড়ে দেয়ায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই সারের ডিলার নীলফামারী জেলা সদরের গাছবাড়ি এলাকার বিকাশ বিশ্বাসের পুত্র ও ডিমলা উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ইউনিয়ন ঠাকুরগঞ্জ বাজারের লাবনী এন্টার প্রাইজের মালিক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস।জানা গেছে, গত রবিবার বিকেলে উপজেলার ঠাকুরগঞ্জ বাজারে লাবনী এন্টার প্রাইজ হতে প্রত্যেক ইউরিয়া ৫০কেজি সারের বস্তা ৮শত টাকা মুল্যে ক্রয় করেন একই এলাকার ইউনুস আলীর পুত্র কৃষক এমদাদুল হক(৪০) মৃত হবিবর রহমানের পুত্র আঃ ছাত্তার কৃষক(৫০)ফরিদুল ইসলামের পুত্র রেজাউল করিম(৫৫) মোজাম্মেল হকের পুত্র ফারুক হোসেন(৩৩)সহ অনেকেই।পরে তাদের ক্রয়কৃত বস্তায় সার কম রয়েছে মর্মে সন্দেহ হলে তারা অন্যখানে সেই সারের বস্তা গুলো ওজন করে দেখেন তাদের প্রতি বস্তায় সার রয়েছে ৪৫ ও ৪৪কেজি করে। যা নির্ধারিত ওজনের চেয়ে বস্তায় ৫/৬কেজি করে কম।পরে তারা ওই সারের ডিলারের মালিক বিশ্বজিৎ বিশ্বাসের কাছে এর কারন জানতে চাইলে তিনি কৃষকদের সাথে খারাপ আচরন করেন। এক পর্যায়ে প্রতারিত হওয়া কৃষকদের সাথে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী ওই ডিলারকে ঠাকুরগঞ্জ বাজারে তার নিজস্ব সারের গুদামেই তাকে তালাবদ্ধ অবস্থায় অবরুদ্ধ করে রেখে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার কে বিষয়টি অবগত করেন।খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা তপন কুমার,ইউনিয়নটির কৃষি উপ-সহকারী সাইদুল বারী ঘটনাস্থলে পৌছে অবরুদ্ধ ডিলারকে তাদের সাথে ডিমলায় নিয়ে আসতে চাইলে এতে বিক্ষুদ্ধ জনতা আরো বেশি উত্তেজিত হয়ে উঠেন।পরে ডিমলা থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।ঘটনার দিনগত রাতে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর,ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক সরকার ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত ডিলারকে দীর্ঘ প্রায় ৬ঘন্টা পর উদ্ধার করেন।অবরুদ্ধ ডিলারকে উদ্ধার করে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো রকম ব্যবস্থা গ্রহন না করেই তাকে অজানা কারনে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেই একাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই ডিলারের বিরুদ্ধে এর পুর্বেও সার ওজনে সার কম দেয়ার অভিযোগ উঠেছিলো।তাই ঘটনার দিনও অভিনব পন্থায় সার ওজনে কম দেয়ায় তাকে অবরুদ্ধ করে নীলফামারী জেলা প্রশাসক খালেদ রহিম ও ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহারের কাছে ঘটনাটি অবগত করা হয়।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, কৃষি বিভাগ এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারলেও কেনো করেননি তা আমার জানা নেই । তবে বিশেষ কোনো মহল ঘটনাটিকে পুজি করে যাতে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরীর মাধ্যমে চলতি মৌসুমে কৃষকদের বিপাকে ফেলতে না পারে সে দিকটি বিবেচনা করে ডিলারের কাছে অঙ্গিকার নামা নিয়েই ঘটনাটি উপস্থিত সমাধান করা হয়েছে। এবং ডিলারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে,এখন থেকে সারের মুল্য বস্তা ওজন করে যত কেজি হবে তত কেজি মুল্য রশিদের মাধ্যমে নিতে। এ ছাড়াও উক্ত সার ডিলারের বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরী করে উর্ধ্বতন কর্তপক্ষের কাছে পাঠানোর প্রস্ততি চলছে ।ডিমলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযুক্ত ডিলারকে দন্ড দিতে পারলেও তিনি তা করেননি । আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে ওই সারের ডিলারের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *