কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে প্রভাব ও ক্ষমতার বলে ৩ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে মজিদ মন্ডলের চেয়ার দখল!

Mozid Pic (1)
ঝিনাইদহ সংবাদদাতা: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে তিন বছর ধরে অধ্যক্ষের চেয়ার দখল করে আছেন উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল। এ নিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক আদেশ নির্দেশ থোড়াই কেয়ার করে চলেছেন। এদিকে অবৈধ ভাবে তার এই চেয়ার দখল ও একের পর এক সরকারী বিধি নিষেধ অমান্য করার কারণে মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও ইতিহাস বিভাগের ১৪ জন শিক্ষকের কপাল পুড়তে বসেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৪ শিক্ষকের অধিভুক্তির শর্ত হিসেবে কলেজের বৈধ অধ্যক্ষ ড.মাহবুবুর রহমানকে পুর্নবাহালের নির্দেশ দিয়েছেন। গত ১০ জুলাই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ড. মোঃ মনিরুজ্জামান ৩৩৯৬৯ নং স্মারকে শর্তারোপ করে এই চিঠি পাঠান। এর আগে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (কলেজ-৩) মোঃ হেলাল উদ্দীন মাহামান্য হাই কোর্টের রিট পিটিশন নং ৮২৬১/২০১৫ এর রায় বাস্তবায়নের জন্য ৯১৪৩ (৬) নাং স্মারকে অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে পুর্নবাহাল করতে চিঠি দেন। এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাছিমা খানম ৭৯৩ নং স্মারক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক-৭ ওয়াহিদা মুসাররত অনীতা ৪৮৪ (৪) নং স্মারকে অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানের প্রতি ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে চিঠি পাঠালেও তাতে সাড়া দেননি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মজিদ মন্ডল। তিনি প্রভাব ও অবৈধ ক্ষমতা জাহির করতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৯২ এর ২৪ (ঢ) ও ২৬ (৩) ধারা ভঙ্গ করে চলেছেন। প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে ভুল বুঝিয়ে অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে চুড়ান্ত বরখাস্ত করার জন্য চিঠি দেওয়া হয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষের পাঠানো সেই চিঠি আমলে নেয়নি জাবি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যায়ের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর ড. মোঃ শামসুদ্দীন ইলিয়াস ৩৩২৪৯ নং স্মারকে পাল্টা চিঠিতে কলেজ সভাপতিকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানকে অধ্যক্ষ পদ থেকে বরখাস্তকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা গেল না। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বরাবর পাঠানো লিখিত অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১ সেপ্টম্বর মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ ড.মাহবুবুর রহমান অনুমোদিত ছুটি গ্রহন পুর্বক উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডলের উপর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা শরীফে যান। ড.মাহবুবুর রহমান মক্কা শরীফে থাকা অবস্থাই ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর সম্পুর্ন বিধি বহির্ভুত ভাবে তাকে সামিয়ক বরাখাস্ত করা হয়। সেই থেকে উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল সরকারী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি বঙ্গ করে অধ্যক্ষের নেমপ্লেট সরিয়ে রুম ও চেয়ার দখল করে নেন। অথচ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে বলা আছে এক বছরের মধ্যে নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগদান করতে ব্যার্থ হলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাক্ষরকৃত কাগজপত্র ও কার্যবিবরনী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক স্বীকৃত অথবা গ্রহীত হবে না। অভিযোগ উঠেছে, এই তিন বছরে আব্দুল মজিদ মন্ডল নিয়োগসহ অনেক গুরুত্বপুর্ন কাগজে সাক্ষর করেছেন। এ সব নিয়োগ ভবিষ্যাতে বাতিল হওয়ার সম্ভবাবনা দেখা দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মোঃ নোমান উর রশিদ জানান, সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানের দাখিলকৃত আবেদন নিস্পত্তি কল্পে তার লিখিত বক্তব্য ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডলের লিখিত বক্তব্য পর্যালোচনা করে ড. মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত হয়নি। তাই তাকে স্বপদে পুর্নবহাল করার জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। এ বিষয়ে তিন বছর ভারপ্রাপ্ত থাকা উপাধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল বলেন, আমি তো ইচ্ছাকৃত ভাবে এই পদে নেই, কমিটি আমাকে রেখেছে। তিনি বলে প্রথমে ছয় মাস ও পরে ফাইন দিয়ে ৬মাস থাকা যাবে। তারপর এক বছরের বেশি থাকতে হলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদান লাগে। আমরা সেটি পাঠিয়েছি। তিনি আরো বলেন, উচ্চ আদালতে মামলা থাকায় ড.মাহবুবুর রহমানকে আমরা যোগদান করতে দিতে পারছিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *