বেনাপোল পোর্ট থানার বহুল আলোচিত এসআই নূরে আলম অবশেষে ক্লোজড যশোর পুলিশ লাইনে
বেনাপোল প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার এসআই নুরে আলোমকে অবশেষে জেলার পুলিশ লাইনে ক্লোজড হয়েছে বলে বিশেষ একটি সুত্র জানিয়েছে। উল্লেখ্য এ কর্মকর্তা দীর্ঘ পাঁচ বছর বেনাপোল পোর্ট থানায় কর্মরত থাকা অবস্থায় নানা অপারাধের সাথে জড়িয়ে পড়েন। বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঁচ বছর চাকুরীর সুবাধে এ পুলিশ কর্মকর্তা বেনাপোল বন্দরের পাশে বড়আঁচড়ায় দেড়কোটি টাকা ব্যায়ে বিলাস বহুল একটি বাড়িও কিনেছেন। বেনাপোল এলাকায় এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে আটক করে ফেনসিডিল,ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়া ও ক্রসফায়ারের ভয় দেখি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ রযেছে। অবশেষে এ কর্মকর্তা মঙ্গলবার তিন ভারতীয় পাসপোট যাত্রীকে আটক করে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। দাবীকৃত টাকা না দিলে তাদেরকে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার ভয়ভিতি দেখায়। এক পর্যায়ে পাসপোট যাত্রীরা নুরে আলমের কাছ থেকে রক্ষা পেতে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন। ছাড়া পাওয়ার পর ঔই তিন ভারতীয় নাগরিক বিষয়টি লিখিতভাবে যশোর পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দেন এবং বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনারকেও বিষয়টি লিখিতভাবে অভিযোগ করেন। এক পর্যায়ে যশোর পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদান্ত করে সত্যত্যা মেলায় বৃহস্পতিবার রাতে নুরে আলমকে বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে জেলার পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয় । নুরে আলমকে ক্লোজের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে চাপা থাকলেও শুক্রবার রাতে তা পোর্ট থানা এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে নুরে আলমের ক্লোজ হওয়ার খবর শুনে একে অন্যের মিষ্টিমুখ করিয়েছেন বলে একাধিক সূত্রা থেকে জানা গেছে। কলকাতার বাসিন্দা নারায়ণ বিশ্বাস (ভারতীয় পাসপোর্ট নম্বর-জেড-৪০৩৫১৬৪) ও তার স্ত্রী শেফালি বিশ্বাস (পাসপোর্ট নম্বর-জেড-৩৯৯০৭৯৩), বাসুদেব ঘোষ (পাসপোর্ট নম্বর পি-৫১০৪৫০৭) এবং তরুণ রায় (পাসপোর্ট নম্বর জেড-৪০৩৫৭০৩) জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে তাদের তিনজনকে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড থেকে আটক করেন এসআই নুর আলম। তাদেরকে ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার ভয়ভিতি দেখিয়ে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে জেল-হাজত এড়াতে দুই লাখ ৬০ টাকা দিয়ে নুরে আলমের কাছ থেকে তাদের মুক্তি মেলে। কলকাতার রপ্তানীকারক আলী হোসেন কবির (পাসপোর্ট নম্বর জেড-৪০৩৭৮৪২) জানান, বুধবারে বেনাপোল বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে আটক করা হয়। তাকেও পোর্ট থানায় নিয়ে ইয়াবা দিয়ে চালানের ভয় দেখিয়ে ৬০ হাজার টাকা আদায় করেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এসআই নুর আলমের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে তারা সবাই যশোরে এসে এক আত্মীয়ের কাছে আশ্রয় নেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আলী হোসেন কবির পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর ওই রাতেই তাকে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়। এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, নুরআলমের ক্রোড়পতি হওয়ার বিভিন্ন রহস্য। এ নুরে আলম ২০১২ সালে বেনাপোল পোর্ট থানায় বদলী হয়ে আসেন। এর পর থেকে বেনাপোলের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে সাধারণ মানুষকে আটক করে কাউকে জঙ্গি, কাউকে ইয়াবা ব্যবসায়ী ও কাউকে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি নিজেও বিভিন্ন অবৈধ্য ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েন। এর ফলে সে রাতারত্রি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান। যেমনিভাবে সে বেনাপোলে ১২ কাটা জমির উপরে আলিসান বাড়ি তৈরি করেছেন। তেমনি ভাবে তার নিজ এলাকায় বরিশালে রয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পাদ। তার নামে-বেনামে ব্যাংকে রয়েছেও কয়েক কোটি টাকা। বেনাপোল পোর্ট থানায় পাঁচ বছর অবস্থানকালে তার দ্বারা অত্যাচারিত মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। বেনাপোল থেকে শুক্রবার রাতে ক্লোজ হওয়ার পর মানুষের মুখে মুখে সেই সব অত্যাচারের কথা মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে।