ভূয়া বাদী সাজিয়ে, উক্ত বাদীর নামে ভূয়া স্বাক্ষর দিয়ে এবং জ্বাল-জ্বালিয়াতি কাগজপত্র সৃষ্টি করে ২/৩ কোটি টাকার সরকারি সম্পত্তির মালিকানা স্বত্বের দাবীতে মহামান্য হাইকোর্টে ৭৫৯/১৪ নং ভূয়া রিট মামলা দায়ের করায় সর্বোচ্চ আদালতের সাথে প্রতারণা, তঞ্চকতা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এবং উপযুক্ত শাস্তি দাবী

M-01
খুলনা প্রতিনিধি : খুলনা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের পরিবহণ শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া, তার দুলাভাই ঢাকা জজ কোর্টের অ্যাডঃ এরশাদ আলী গাজী এবং এরশাদ আলীর স্ত্রী মিসেস আজিমা খানম কর্তৃক প্রায় ২/৩ কোটি টাকা মূল্যমানের খুলনাস্থ খালিশপুর হাউজিং এষ্টেটের ১৭ নং রোডের ওয়েষ্ট-এন্ড জোন ব্লকের সি/৪৭ নং ‘কল্যানী’ সরকারি পরিত্যক্ত দোতলা বাড়ীটি পরস্পর যোগসাজসে প্রতারণা, তঞ্চকতা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতি কাগজপত্র নিজ হাতে সৃষ্টি করে এবং নিজ হাতে ভূয়া ইয়াছিন বেগ এর নামের স্বাক্ষর দিয়ে উক্ত আজিমা খানম গং কর্তৃক উহা আতœসাত ও মালিকানা স্বত্বের দাবীতে মহামান্য হাইকোর্টে ৭৫৯/১৪ নং রিট মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে নিজ ও সরকারি স্বার্থে বাড়ীটি রক্ষার্থে উক্ত ‘কল্যানী’ বাড়িটির দোতলার সরকারি বরাদ্দগ্রহীতা মিসেস আফরোজা সুলতানার এক অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অভিযোগকারীনির দাখিলকৃত কাগজপত্র ও সরে-জমিনে তদন্তে জানা যায় যে, (১) বাড়িটির নিচ তলার সরকারি বরাদ্দগ্রহীতা ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া তার নিজ হাতে জ্বাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে উক্ত বাড়ীটির মূল মালিক পাকিস্তানী নাগরিক ‘রেহেনা সহিদ’কে ইং- ০৭/০৫/১৯৮৫ তারিখে উক্ত সি/৪৭ নং বাড়ীর ঠিকানায় বাংলাদেশের ভূয়া নাগরিক বানিয়েছে, (২) ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া নিজ হাতে জ্বাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে উক্ত ‘রেহেনা সহিদ’কে ইং- ০৫/০৭/১৯৭৯ তারিখে খুলনা ‘মাদার কেয়ার ক্লিনিকে’ বুকের ব্যাথায় ভূয়া মৃত্যু দেখিয়েছে, (৩) ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া নিজ হাতে জ্বাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে উক্ত ‘রেহেনা সহিদ’কে ইং- ০৬/০৭/১৯৭৯ তারিখে খুলনা পৌরসভার যে কোন অজ্ঞ্যাত কবর খানায় তৎকালীন ২/= টাকার স্থলে মিথ্যা ৫০/= টাকার দাফন ফি এবং ৩৮ বছর বয়স নিজ হাতে লিখে ‘রেহেনা সহিদ’কে উক্ত কবর খানায় ভূয়া দাফন দেখিয়েছে, (৪) ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া নিজ হাতে জ্বাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে কবরখানার রেজিষ্ট্রার জনৈক ভূয়া ‘শহিদুল’ এর স্বাক্ষরটি ফারুকুজ্জামান নিজে স্বাক্ষর করেছে, (৫) ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া ইং- ০৭/০৫/১৯৮৫ তারিখে নিজ হাতে জ্বাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে জনৈক ‘ইয়াছিন বেগ’কে উক্ত ‘রেহেনা সহিদ’ এর একমাত্র ওয়ারেশ ছেলে বানিয়ে এবং ইং- ৩০/১২/১৯৬৯ তারিখে জন্ম দেখিয়ে ‘ইয়াছিন বেগকে’ বাংলাদেশের ভূয়া নাগরিক বানিয়েছে, (৬) উত্তর খালিশপুর ওয়ার্ডের প্রাক্তন কমিশনার মৃত, আব্দুর রহমান এর প্যাডের উপর দেয়া কে.এম.পি’র সিলটি ফারুকুজ্জামান নিজে বানিয়েছে এবং প্যাডের উপর ইং- ০৭/০৫/১৯৮৫ তারিখ উল্লেখে মৃত, আব্দুর রহমানের বাংলা স্বাক্ষরটি ও ফারুকুজ্জামান নিজ হাতে স্বাক্ষর করেছে, (৭) ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া ইং- ৩১/০৭/২০১৪ তারিখে নিজ হাতে ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’ নামের ইংরেজী স্বাক্ষরটি দিয়ে তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, ও.জো.পা.ডি.কোঃ, বয়রা, খুলনার বরাবরে অভিযোগকারীনির দোতলার সরকারি বিদ্যুৎ মিটারটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের আবেদন করে (রিট মামলার ইং- ১৩/০২/২০১৪ তারিখের ৪ সপ্তাহের রুলের ১ পাতা ফটোকপি সংযুক্ত করে) বিদ্যুৎ বিভাগের প্রকৌশলীদের সাথে অবৈধ যোগাযোগ করে তাদের দিয়ে ফারুকুজ্জামান উক্ত মিটারটির সংযোগ বিচ্চিন্ন করেছে এবং মিটারটি পরিত্যক্ত কর্তৃপক্ষের বিনানুমতিতে অন্যায়ভাবে তাদের দিয়ে তাদের বিদ্যুৎ অফিসে নিয়েছে, (৮) ফারুকুজ্জামানের দুলাভাই অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী গাজী উক্ত বাড়ীটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকা থেকে অবমুক্তির জন্য ইং- ২০১২ সালে ঢাকার ২য় কোর্ট-অব-সেটেলমেন্টের আরজিতে অ্যাডঃ এরশাদ আলী নিজ হাতে উক্ত ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’ এর ৩টি বাংলা স্বাক্ষর দিয়েছে এবং এরশাদ আলী নিজের ৩টি ইংরেজী স্বাক্ষর দিয়ে উক্ত আবেদনটি উক্ত ট্রাইবুন্যাল আদালতে জমা না দিয়ে নাম্বার ও তারিখ বিহীন ১টি ভূয়া অবমুক্ত মামলা মহামান্য হাইকোর্টে রুজু দেখিয়েছে এবং এরশাদ আলী মহামান্য হাইকোর্টের উক্ত ৭৫৯/১৪ নং রিট মামলাটির কজ-অব-অ্যাকশনের এবং রুল নিশি পাওয়ার একটা ভালো গ্রাউন্ড তৈরী করে মাত্র ৪ সপ্তাহের জন্য একটা রুল নিশি পেয়েছে, (৯) ইহাছাড়া ‘আজিমা খানম’ ১০ নং ওয়ার্ডের স্থলে ১২ নং ওয়ার্ড কমিশনারের প্যাড এর উপর ইং- ৩০/০৭/২০১৩ তারিখ উল্লেখে এবং নিজ হাতে লিখে ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’কে খালিশপুর হাউজিং এষ্টেটের সাউথ ব্লকের ১০১ নং রোডের ৩৩ নং একতলা বাড়ীর ঠিকানায় ইং- ৩০/১২/১৯৬৯ তারিখে জন্ম দেখিয়ে ‘ইয়াছিন বেগ’ এর ভূয়া ও মিথ্যা ‘জন্ম-সনদ’ সৃষ্টি করেছে এবং উক্ত ঠিকানায় ‘ইয়াছিন বেগ’কে ১৯৬৯৪৭৯৪৫১২০২২৯৫৪ নং ব্যক্তি পরিচিতি নাম্বার উল্লেখে ‘জন্ম-নিবন্ধন’ দেখিয়ে তাকে বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক বানিয়েছে, (১০) সর্বোপরি ‘আজিমা খানম’ বর্ণীত জ্বাল-জ্বালিয়াতির মূল কাগজপত্রের পরিবর্তে উক্ত আদালতের বিধি ভঙ্গ করে উহার শুধু ফটোকপি কাগজপত্র সংযুক্ত করে ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’ এর নাম দিয়ে এবং আরজির ১৮ ও ১৭ পাতায় ‘আজিমা খানম’ নিজ হাতে ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’ এর স্বাক্ষর দিয়ে ও ‘ইয়াছিন বেগ’ এর ২৬৯৫৪৪৪৩২৯৪৪ নং ভূয়া ভোটার আই.ডি, নাম্বার উল্লেখ করে মহামান্য হাইকোর্টে মালিকানা স্বত্বের দাবীতে উক্ত ৭৫৯/১৪ নং রিট মামলাটি দায়ের করেছে।

অভিযোগকারীনি আফরোজা সুলতানা সর্বোচ্চ আদালতের সাথে ‘আজিমা খানম’ গংদের উক্তরূপ প্রতারণা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতির উপরোক্ত বিচার দাবী করেছে। কারণ, উক্ত আই.ডি, ও জন্ম-নিবন্ধন নাম্বারে এবং ‘ইয়াছিন বেগ’ নামের কোন ব্যক্তির আদৌ কোন অস্তিত্ব বাংলাদেশের কোথাও নেই। যে কারণে, মহামান্য হাইকোর্টের ৭৫৯/১৪ নং রিট মামলার আরজির ১৮ পাতায় উক্ত আজিমা খানম ‘ইয়াছিন বেগ’ নামের সই-স্বাক্ষরটি নিজে স্বাক্ষর করেছে? তাছাড়া মূল আবেদনকারী ‘ইয়াছিন বেগ’ এবং সৃষ্ট মূল কাগজপত্র ছাড়া মহামান্য হাইকোর্টে ভূয়া বাদী ও শুধু ফটোকপি কাগজপত্রের উপর কিভাবে উক্ত ৭৫৯/১৪ নং রিট মামলাটি আদালতে গৃহীত ও রুজু হলো ? তাদের খুঁজে বের করা হোক। এ জন্য কারা দায়ী ? সর্বোচ্চ আদালতে যদি উক্ত রুপ প্রতারণা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতি হয় তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় বিচার পাবে ?

যে কারণে অভিযোগকারীনি আফরোজা সুলতানা জ্বাল মূল কাগজপত্রের পরিবর্তে বিধি বহির্ভূতভাবে উহার ফটোকপি কাগজপত্র সংযুক্ত করে এবং ভূয়া ‘ইয়াছিন বেগ’ এর স্বাক্ষর দিয়ে উক্ত ‘আজিমা খানম’ মালিকানা স্বত্বের দাবীতে মহামান্য হাইকোর্টে ৭৫৯/১৪ নং ভূয়া রিট মামলাটি দায়ের করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের সাথে নি:সন্দেহে প্রতারণা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতি করায় মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি জনাব সুরেন্দ্র কুমার সিনহ্,া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা মাননীয় অ্যাটর্নী জেনারেল জনাব মাহাবুব-ই-আলম, দূর্ণীতি দমন কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান জনাব ইকবাল মাহ্মুদ, দূর্ণীতি দমন কমিশনের মাননীয় কমিশনার জনাব আমিনুল ইসলাম এবং সুুপ্রিম কোর্টের মাননীয় রেজ্রিঃ জেনারেল জনাব সৈয়দ আমিনুর ইসলাম এর কাছে নিুে বর্ণীত দূর্ণীতি মামলার ১, ২ ও ৩ নং আসামী যথাক্রমে বর্তমান খালিশপুরস্থ সরকারি মহসিন কলেজে প্রাক্তন ছাত্রদল নেতা, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পিস কমিটির চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে, ২টি নারী নির্যাতন ও নারী ধর্ষণ মামলার আসামী এবং ২টি দূর্ণীতি ও জ্বাল-জ্বালিয়াতি মামলার আসামী উক্ত ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া, তার দুলাভাই অ্যাডঃ এরশাদ আলী ও তার বোন আজিমা খানম কর্তৃক প্রতারণা, তঞ্চকতা ও জ্বাল-জ্বালিয়াতির বিরুদ্ধে খুলনা মহানগরের সিনিয়র বিজ্ঞ দায়রা জজ বাহাদুরের ইং- ২৬/১১/২০১৫ তারিখের নির্দেশে খুলনার সম্বন্বিত জেলা কার্যালয়ে বর্তমানে চলমান ক্রিমিঃ মিস ১৫২১/১৫ নং দূর্ণীতির মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছে।

সর্বোপরি অভিযোগকারীনির বক্তব্য হলো এই যে, ফারুকুজ্জামান দাড়িয়া খুলনা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের একটি বে-সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা হলেও সরকারি নিয়মনীতি সম্পূর্ণ ভঙ্গ করে তার কথিতমতে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তিনি কিভাবে উক্ত সরকারি বাড়ীটি বরাদ্দ পেলেন তা খুলনার সর্বস্তরের মানুষের একমাত্র জিজ্ঞাসা ? কারণ ফারুকুজ্জামান যদি উক্ত বাড়ীটি বরাদ্দ এবং উহার দখল না পেত তাহলে তিনি এবং বোন-দুলাভাই মিলে নিজেদের হাতে জ্বাল-জ্বালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র সৃষ্টি করে উক্ত ২/৩ কোটি টাকা মূল্যমানের বাড়ীটি আতœসাতের অপচেষ্টা ও ষড়যন্ত্র করতে পারতো না। যে কারণে জরুরী ভিত্তিতে তার নামীয় বরাদ্দ বাতীল করে সরকারি সম্পদ রক্ষার্থে উক্ত বাড়ী থেকে ফারুকুজ্জামানকে এখনই উচ্ছেদ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের কাছে একান্ত জোর দাবী জানিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *