বেনাপোল চেকপোষ্টের ইতিহাসে এক দিনের যাত্রী পারাপারে রেকর্ড-
বেনাপোল : আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোলের ইতিহাসে এক দিনে রেকর্ড সংখ্যক যাত্রী পারাপার হয়েছে। গত শনিবার ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছেন আট হাজার ১০২ জন পাসপোর্ট যাত্রী। তবে যাত্রী সংখ্যা বাড়ায় দীর্ঘূ লাইনে দাড়িয়ে অসহনীয় দুর্ভোগে পড়ছেন যাতীরা। বেনাপোল চেকপোষ্ট নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় কোন যাত্রী ছাইনি না থাকায় রোদ ও বৃষ্টিতে ভিজে গন্তব্যে যাচ্ছেন তারা। ঈদের আগে ভারতীয় হাইকমিশন ‘ঈদ প্যাকেজ’ এর আওতায় অন্তত ৬০হাজার বাংলাদেশিকে ভারত ভ্রমণের ভিসা দেয় যার প্রভাব পড়েছে স্থলপথের এই চেকপোস্টে।
বেনাপোলের শুন্যরেখা থেকে কলকাতার দুরত্ব ৮৪ কিলোমিটার হওয়ায় অল্প সময়ে কম খরচে কলকাতায় যাওয়া যায়। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন বেনাপোল দিয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার মানুষ যাতায়াত করে কিন্তু ১জুলাই থেকে ১০জুলাই দুপুর পর্যন্ত দশ দিনে ৫২ হাজার ৩১২ জন যাত্রী বেনাপোল-হরিদাসপুর চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াত করেছেন। এ থেকে সরকার রাজস্ব পেয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। রোববার দুপুর পর্যন্ত ৬হাজার ৪৫৫ জন যাত্রী পারাপার হয়েছেন বলে জানান চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের উপ-পরিদর্শক জিয়াউল হক জিয়া।
সরকারি ছুটি-শেষে কর্মস্থল সহ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে পাসপোর্ট যাত্রীরা। তাই গত দুদিনে বেনাপোলে ছিল যাত্রীদের-উপচে পড়া ভিড়। যাত্রীদের ভিড়ে অনেকে পড়েছেন দুর্ভোগে-তবে অধিকাংশ যাত্রীদের দাবী বেনাপোল চেকপোষ্টে যাত্রী ছাউনি নির্মান করা হোক।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি ইকবাল মাহমুদ বলেন,এবার ভারত ভ্রমণেচ্ছুদের চাপ অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি।আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে বাংলাদেশেও আসছেন অনেকে।শনিবার সরকারি ছুটির শেষ দিন হওয়ায় রোববারের অফিস ধরতে ওপারে যাওয়া বাংলাদেশিরাই ফিরেছেন বেশি। তাই শনি ও রবিবার ছিল যাত্রীর রেকর্ড চাপ।
তিনি আরো বলেন,১ জুলাই পাঁচ হাজার ৭৭ জন, ২ জুলাই ছয় হাজার ৫৫২ জন, ৩ জুলাই পাঁচ হাজার ৮২ জন, ৪ জুলাই চার হাজার ৯২২ জন,৫ জুলাই চার হাজার ৫১৪ জন, ৬ জুলাই চার হাজার ৫৫৭ জন, ৭ জুলাই তিন হাজার ৮৪৭ জন, ৮ জুলাই তিন হাজার ২০৪ জন এবং ৯ জুলাই আট হাজার ১০২ জন যাত্রী বেনাপোল দিয়ে পারাপার হয়েছেন।
“কম জনবল নিয়ে যাত্রীদের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও যাত্রীসেবায় ভোগান্তি কমাতে এবং দ্রুত আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার জন্য ইমিগ্রেশন ভবনে নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।ইমিগ্রেশন চত্বরে পুলিশের জনবলও বাড়ানো হয়েছে।”
রোববার দুপুরে স্বজনদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ, চিকিৎসা,ব্যবসা, কেনাকাটা ও বেড়ানোর উদ্দেশে যাওয়া ভারত ফেরত কয়েকজন যাত্রীর সাথে কথা হয়। ঢাকার আবু মোজাম আলী জগদিস সরকার বলেন,বেনাপোল চেকপোস্টে বেশ দ্রত পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলেও ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্টে প্রবেশের দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।এমন ভোগান্তিতে আগে কখনও পড়েনি। বরিশালের বিউটি রানী ও বাগেরহাটের মনি মন্ডল বলেন,খুব স্বাচ্ছন্দে ভারত ভ্রমন করলেও পেট্রাপোল চেকপোস্টে এসে আমরা অসুস্থ্য হয়ে পড়েছি।৫ু’ঘন্টা আমাদেরকে লাইনে দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে।জনবল কম থাকায় ওপারে পাসপোর্টের আনুষ্ঠানিকতা সারতে দেরি হচ্ছে। দুরভোগ চাননা তারা।