মঠবাড়িয়ায় স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার দুই সন্তানের জননী দিলরুবা জীবনের নিরাপত্তা চায়

02
এস.এম সাইফুল ইসলাম কবির : পিরোজপুরের মঠবাড়ীয়া পৌরসভার সবুজ নগর এলাকার স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার দুই সন্তানের জননী দিলরুবা ইয়াসমিন জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছে। পরকীয়ার শিকার স্বামীর জীবন নাশের হুমকির ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে দিলরুবা। জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের মহা-পরিদর্শক বরাবরে আবেদন করেছেন। অত্র উপজেলার দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামের মৃত: আমির হোসেনের কণ্যা দিলরুবা ইয়াসমিন এর সাথে ২০০১ সালে একই উপজেলার উত্তর মিঠাখালী মাঝেরপুল গ্রামের আঃ রহমান হাওলাদারের পুত্র এনামুল হক ডালিমের সাথে মুসলিম শরিয়াত মোতাবেক কাবিননামা মুলে বিয়ে হয়। এনামুল হক ডালিম মঠবাড়িয়ার ডাক্তার রুস্তুম আলী ফরাজী ডিগ্রী কলেজের কম্পিউটার ডিমোনেস্টটর। বিয়ের ০৬ মাসের মাথায় স্বামী ডালিম তার পিতার কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা যৌতুক গ্রহণ করেন। দিলরুবার মঠবাড়ীয়ায় একটি বেসরকারী ক্লিনিকে চাকুরীরত। সচতুর স্বামী তার বেতনের টাকা ও কায়দা করে হাতিয়ে নেয়। টাকা নিতে না পারলে নেমে আসে তার উপর অমানুষিক, শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন। এদিকে মঠবাড়ীয়া পৌরসভায় জমি কেনার জন্য দিলরুবার পিতার জমি বিক্রি করে ৭ লক্ষ টাকা প্রদান করে। এ জমি তার নামে রেজিস্ট্রি করার কথা থাকলে সুকৌশলে ডালিম তার নামে রেজিস্ট্রি করে নেয়। ইতিমধ্যে ডালিম একি কলেজের এক বিবাহিতা ছাত্রীর সাথে পরকীয়ায় জরিয়ে পরে। আর এ নিয়ে তাদের সংসারে নেমে আসে অশান্তির কালো ছায়া। শুরু হয় পারিবারিক কলাহ। সাথে শারীরিক ও মানুষিক নির্র্যাতন। দিলরুবা তার দু’ সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে স্বামীর অত্যাচার নির্যাতন মুখ বুঝে সহ্য করে। স্বামীর পরকীয়া প্রেমিকার সহযোগিতার ও কুপরামর্শে তাকে তাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে আবারো ৫ লক্ষ টাকার যৌতুক দাবী করে। নিরুপায় হয়ে ২০১৪ সালে দিলরুবা তার স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৩১৪/২০১৪। যৌতুক লোভী স্বামী ডালিম মামলার শিকার হয়ে নিজেকে বাঁচাতে আবারো চতুরতার আশ্রয় নেয়। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ রুস্তুম আলী ফরাজী এমপির মধ্যস্থায় মামলা প্রত্যাহার করানো হয়। মামলা প্রত্যাহারের কিছুদিন যেতে না যেতেই পুনরায় তাকে নির্যাতন ও নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত হয়। বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য কলেজ সভাপতি ডাঃ রুস্তুম আলী ফরাজী এমপির কাছে ১৪ এপ্রিল আবেদন করেন দিলরুবা। এ আবেদনের পরয়ানা না করে যৌতুক লোভী স্বামী তাকে ডিভোর্স দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। না দিলে তাকে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দিলরুবা ইয়াসমিন তার ২ কন্যা সন্তান নিয়ে জীবনের নিরপত্তাহীনতায় দিনযাপন করছেন। গোপনে লম্পট এনামুল হক ডালিম অন্যত্র বিয়ে করেছে। ০৩ বছর যাবৎ স্ত্রী দিলরুবা ও সন্তানদের কোন ভরনপোষন না দেয়ায় দিলরুবার পিতা মারা যাওয়ায় মা,ভাই ও বিভিন্ন আত্মীয় স্বজদের সহযোগিতায় সন্তানদের নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। সর্বশেষ ২৮ জুন স্বামী তার ছোট ভাইয়ের সহযোগিতায় দিলরুবার ঘরের আলমারির চাবি নিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেওয়ার নাম করে সোনাদানাসহ যাবতীয় অলংকার রাতের আধারে চুরি করে নিয়ে যায়। এঘটনায় মঠবাড়ীয়া থানায় সাধারণ ডায়েরী করতে ডেউটি অফিসার তা নেয়নি। উপায়ান্ত দিলরুবা ইয়াসমিন পুলিশ মহাপরিদর্শক সহ বিভিন্ দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেন। অপরদিকে অভিযোগের তদন্ত এসপি মহাদয়ের নিকট আসলে তিনি মঠবাড়ীয়া থানা অফিসার ইনচার্জকে দায়িত্ব দিলে তিনি তদন্তের স্বার্থে দিলরুবা উপস্থিত হলেও তার স্বামী ডালিম কে নোটিশ দিলেও তিনি আজ ৩ জুলাই মঠবাড়ীয়া থানায় উপস্থিত হন নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী তাকে লাগাতার হুমকি দেয়। তার হুমকিতে দিলরুবা এখন দু’ সন্তান নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। দিলরুবা তার লম্পট স্বামীর বিচার সহ জীবনের নিরাপত্তা চাচ্ছে প্রসাশনের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *