মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনার শাড়ি-লুঙ্গি আ’লীগ নেতা-নেত্রীদের মাঝে বিতরণ
মোশাররফ হোসেন বুলু, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) : ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদানের শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করা হল আ’লীগ নেতা ও নেত্রীদের মাঝে।
গতকাল (শনিবার) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে দিন ব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহন করা হয় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন লক্ষ্যে। কর্মসূচির মধ্যে ছিলে রাত ১২ টা ১ মিনিটে তপোধনী, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, খেলা ধুলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, প্রীতি ফুটবল, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশাত্ববোধক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কিন্তু সুন্দরগঞ্জ আঃ মজিদ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠানের শুরুতেই আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডকে প্রতিবারের ন্যায় আহবান না করায় গ্যালারীতে উপস্থিত অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা ক্ষুদ্ধ হয়ে অনুষ্ঠান স্থান ত্যাগ করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদে কমান্ডার এমদাদুল হক বাবলুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান ত্যাগি মুক্তিযোদ্ধাদের এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা আঃ হামিদ আকন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান বাবলু মিয়া, মৃত মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী শামিমা ইয়াসমিন, শামিম আরা বেগম ও রহিমা বেগম। আলোচনা সভায় উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করার নিন্দা জানানো হয়। এ উপজেলায় মোট মুক্তিযোদ্ধা ২২৯ জন। এর মধ্যে মৃত ৬২ মুক্তিযোদ্ধার পরিবার ও ১৬৭ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের অনুষ্ঠানে ১৪/১৫ জন মুক্তিযোদ্ধা থেকেই যান। এই ১৪/১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে অডিটরিয়াম হলে সংবর্ধিত করা হয়। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু মোট ২২৯ জন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মধ্যে ১৪/১৫ জনকে শাড়ি লুঙ্গী দিয়ে সংবর্ধনা পর অবশিষ্ট শাড়ি লুঙ্গী উপস্থিত আ’লীগ নেতা-কর্মী ও মহিলা আ’লীগ নেত্রীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এব্যাপারে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে (ভারপ্রাপ্ত) ইউএনও হাবিবুল আলম জানান, জাতীয় পতাকা উত্তোলনে প্রটোকলে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডকে আহবানের নিয়ম নাই। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড এমদাদুল হক বাবলু জানান, অনুষ্ঠানের ঘোষক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহমুদ হোসেন মন্ডল জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ঘোষনায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডকে আহবান না করে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননা করেছেন। তাই অনুষ্ঠান স্থান ত্যাগ করি। তবে এব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, আমি অনুষ্ঠানের ঘোষক ছিলাম না।