৫ দফা দাবিতে পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের ধর্মঘট গোপালপুরে অচল হয়ে পড়েছে ডাক যোগাযোগ
এ কিউ রাসেল, গোপালপুর (টাঙ্গাইল) : সম্মানী ভাতা বৃদ্ধি, উৎসব ভাতা প্রদান, বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদানসহ ৫ দফা দাবিতে সারা দেশের ন্যায় টাঙ্গাইলের গোপালপুরে চলছে পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের অনিদিষ্ট কালের ধর্মঘট। শাখা পোস্ট অফিস গুলোতে ঝুলছে তালা, অচল হয়ে পড়েছে ডাক যোগাযোগ।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, ধর্মঘটের কারণে পোস্ট অফিস ও সাব-পোস্ট অফিস গুলোতে ডাকের স্তুপ হয়েছে। তালা ঝুলছে ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস গুলোতে। কাজ করছে না ব্রাঞ্চ পোস্ট মাস্টার, পিয়ন ও রানাররা। ধর্মঘট থাকায় উপজেলার ১৯টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসে কোনো ডাক পৌঁছছে না। ফলে চিঠিপত্র, রেজিস্ট্রি, মানিঅর্ডার, ইলেকট্রিক মানি অর্ডার বিলিসহ ডাক বিভাগের যাবতীয় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ অঞ্চলের গ্রাহকরা।
জেলা পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও গোপালপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, উপজেলায় ১টি উপজেলা পোস্ট অফিস ও হেমনগর এবং ঝাওয়াইলে দুটি সাব-পোষ্ট অফিস রয়েছে। আর উপজেলায় মোট ১৯টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে। আর প্রতিটি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসে ১জন শাখা পোস্ট মাস্টার, ১জন পিয়ন ও ১জন রানার কর্মরত রয়েছে। যাদের বেতন যথাক্রমে মাত্র এক হাজার ২৬০, এক হাজার ২৩০ ও এক হাজার ১৮০টাকা।
পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়ন গোপালপুর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মতিন বলেন, দ্রব্যমূল্যের এই উর্ধ্বগতির এ বাজারে হাজার ১২শত টাকায় কি করে সংসার চালানো সম্ভব ? দেশের গ্রামে বসবাসরত ৮০শতাংশ মানুষের ডাক যোগাযোগের সেবা দেই আমরা ইডি কর্মচারীরা। অথচ তাদের সম্মানীভাতা অত্যন্ত কম। এমন নজির বিশ্বের কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। মানবিক কারণে ইডি কর্মচারীদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানাই। তিনি আরো বলেন, গত ১৪ তারিখ থেকে সারা দেশে আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
হেমনগর সাব-পোস্ট অফিসে কর্মরত পিয়ন মো. লাল মিঞা (৭০) অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেন, বাবা সেই ২০ বছর বয়স হতে ডাক বিভাগে কাজ করে যাচ্ছি। ২২ টাকা বেতন থেকে ৫০বছরে বেতন দাড়িয়েছে ১ হাজার ১৮০ টাকা। বয়সের ভারে অন্য কোন কাজও করতে পারি না। এ টাকায় ওষুধ তো দূরের কথা সংসারও চলে না। এখন মরলেও বাঁচি।’
হেমনগর সাব- পোস্ট অফিসের সাব- পোস্ট মাস্টার মো. নিজাম উদ্দিন জানান, তার অফিসের অধিনে ৬টি ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস রয়েছে। কিন্তু পোস্টাল ইডি কর্মচারী ইউনিয়নের অনিদিষ্ট কালের ধর্মঘট চলার কারণে এ অঞ্চলে স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহৃত হচ্ছে। তবে তিনি তার একজন রানার ও একজন পিয়ন দিয়ে ডাক পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছেন।