লাশ যখন মর্গে, তখনও সুস্থ এবং বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা দেন এএসআই আজাদ ! ঝিনাইদহে থানা হাজতে আটক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু !
ষ্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ,:ঝিনাইদহের শৈলকুপায় থানা হাজতে শরিফুল ইসলাম ওরফে কাজল মন্ডল (৩৫) নামে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে তার মৃত্যু হয়। নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি তিনি আসলেই আত্মহত্যা করেছেন তা নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। নিহত কাজল মন্ডল কুষ্টিয়ার ইবি থানার হাসানবাগ রাজাপুর গ্রামের জুলহক মন্ডলের ছেলে বলে শৈলকুপা থানা থেকে নিশ্চিত করা হয়।শৈলকুপা থানা থেকে মোমিনুল পরিচয়দানকারী পুলিশের এস আই কামাল জানান, তিনি গলায় রশি দিয়ে আহত্মহত্যা করেছেন। তবে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, কাজল মন্ডল অন্য একটি বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কার বাড়িতে এবং কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা ওসি জানাতে পারেনি। অন্যদিকে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানার এ এস আই আজাদ হোসেন সাংবাদিক জাহিদুর রহমান তারিক কে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাজল মন্ডলকে আমিই গাজাসহ শৈলকুপার ভাটই বাজার থেকে আটক করে থানা হাজতে রাখি। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাজত খানার বাথরুমে গলায় রশি দিয়ে কাজল মন্ডল আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তার লাশ যখন মর্গে, তখনও সুস্থ এবং বেঁচে থকার নিশ্চয়তা দেন এএসআই আজাদ। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ফাহমিদা হক সাংবাদিক কে জানান, আজ বেলা ১১টার দিকে শৈলকুপা থানার পুলিশ গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কাজল মন্ডল নামে এক আসামিকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। এ সময় কাজল মন্ডল খুবই মুমূর্ষু ছিলেন। তাকে দ্রুত ৩৫৪২/১৮ নং ইমারজেন্সি ভর্তি রেজিষ্টারে চিকিৎসা দেয়া হয়। কিন্তু রোগীর হার্টবিট কম থাকায় তাকে দ্রুত আবার পুলিশের গাড়িতেই ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগের রেজিষ্টারে হ্যাংগিং রোগীর কথা উল্লেখ আছে। এদিকে দুপুর ১২টার দিকে কাজল মন্ডলকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শামরিন আহম্মেদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডাঃ শামরিন আহম্মেদ সাংবাদিক কে, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো জানান, লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোন চিহ্ন বা আলামত নেই। ময়নাতদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, এমনও হতে পারে কোন আঘাতে আভ্যন্তরীন ক্ষত সৃষ্টির কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে কাজল মন্ডলের আত্মহত্যার গল্প, স্থান ও মৃত্যুর সময় নিয়ে ওসি মহিবুল এবং এএসআই আজাদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারণা নির্যাতনে থানা হাজতেই কাজল মন্ডলের মৃত্যু হয়। বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহাবার আলী শেখ জানান, আমি একটি জরুরি মিটিংয়ে আছি। থানা হাজতে গলায় রশি দিয়ে মৃত্যুর কোন তথ্য আমার জানা নেই। নিহত কাজলের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার ইবি থানার রাজাপুরে। যোগাযোগ করে জানা গেছে, তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তার বাবা জুলহক মন্ডল ছেলের কোন খোঁজ খবর রাখতেন না। ছোটখাট চুরির সঙ্গে কাজলের সম্পৃক্ততারকথা গ্রামবাসি জানান।তবে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় কাজলের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই।