লোহাগড়া আড়পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, ঘটতে পারে ভয়াবহ দূর্ঘটনা
কাজী আশরাফ,লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়া নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। জরাজীর্ণ এ ভবনে বড় বড় ফাঁটল দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে এ ভবনটি। ঝরে যেতে পারে অনেক সম্ভাবনাময় শিক্ষর্থীর প্রাণ। আতংকের মধ্যে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছে এ বিদ্যালয়ে। ১৯৫২ সালে ১৪২ শতক জমির ওপর নির্মিত এই বিদ্যালয়টি বর্তমানে ৩৮৬ জন শিক্ষার্থী আছে। এলাকার সাধারণ মানুষের ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করে এ বিদ্যালয়ে । তাদের স্বপ্ন, এখান থেকে প্রান্তিক শিক্ষা শেষ করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। কিন্তু বিদ্যালয়ের দুইটি ভবনের মধ্যে একটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শিশুদের স্বপ্ন যেন দু:স্বপ্নে পরিনত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভবনের ভীমগুলো ফেঁটে পলেস্তারা খসে পড়ে রড বেরিয়ে গেছে। ভবনের বেশিরভাগ পিলার গুলির পলেস্তারা খসে পড়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। অভিভাবক এবং শিক্ষকদের আশঙ্কা, যে কোন মুহুর্তে ভবনের ছাদ ধ্বসে ঘটতে পারে বড় ধরনের দূর্ঘটনা। শিশুদের বসার বেঞ্চগুলো নড়বড়ে এবং প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। গত ১২ মার্চ নড়াইল জেলা প্রশাসক আঃ গফ্ফার খান বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এসে ভবনের ভয়াবহ দূরাবস্থার চিত্র দেখে পরিদর্শন প্রতিবেদনে মন্তব্য করে বলেন, “এই ভবনে ছাদ ধ্বসে দূর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে, বিধায় বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ করা একান্ত অপরিহার্য। একই সাথে তিনি বিদ্যালয়ে একটি ভবন নির্মানের জন্য সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করেন”। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়ের এই ভবনটি উপজেলা প্রকৌশল দপ্তর থেকে পরিদর্শন শেষে পরিত্যাক্ত ঘোষনা করা হয়। এত কিছুর পরও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ে এসে সব সময় আতংকে থাকি। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও আতংকে পড়ালেখায় মনোযোগ দিতে পারছেনা। এক শিপ্টের এই বিদ্যালয়টিতে একই সঙ্গে ৭টি ক্লাশ নেয়া হয়। শ্রেনী কক্ষের অভাবে উপায় না পেয়ে প্রাণের ঝুকি নিয়ে সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করা ভবনে পাঠদান করছি। তিনি আরও জানান, অনুমোদিত শিক্ষক পদ ৭জন হলেও বর্তমানে ৪ জন শিক্ষক আছে এই বিদ্যালয়ে। প্রয়োজনের তুলনায় এত অল্প শিক্ষক দিয়ে ৩৮৬ জন ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান করাতে গিয়ে প্রতিনিয়ত সমস্যায় পড়তে হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: লুৎফর রহমান বলেন, চলতি বছরে আমি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করি। বিদ্যালয়ের ভবনটির দুরাবস্থা দেখে প্রধান শিক্ষককে অন্যত্র পাঠ দান করার নির্দেশ দিয়েছি। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সেলিম রোজা সাংবাদিকদের বলেন, ভবনের দুরাবস্থার কথা আমি ইতিপূর্বে জেনেছি। তিনি আরও বলেন, বিদ্যালয়টিতে দ্রুত নতুন ভবন নির্মান করে যাতে সমস্যা সমাধাণ করা যায় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে কথা বলব।