সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনী ডাক্তার না থাকায় ১ মাস ধরে প্রসূতি অস্ত্রোপচার বন্ধ

মো. আল-আমিন খান: টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিং (ডিএসএফ) প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের জরুরি অস্ত্রোপচার এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে জরুরি প্রসূতি সেবা (ইওসি) কার্যক্রমের নিয়মিত অস্ত্রোপচারও বন্ধ রয়েছে। দু’জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় এ দু’টি সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। ফলে গর্ভবতী মায়েরা তাদের নিয়মিত প্রসূতিসেবা ও আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। প্রাইভেট ক্লিনিকে সেবা নিয়ে গিয়ে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হচ্ছে তাদের। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়মিত গাইনী কনসালটেন্ট সুলতানা মর্জিনা ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ফেরদৌসি সুলতানা (ইওসি সার্জন) নামের দু’জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও সুলতানা মর্জিনা দীর্ঘদিন ধরে ছুটি নিয়ে কানাডায় রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অবস এ্যান্ড গাইনী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সার্জন) ডি আই রেজাউল করিম ও জুনিয়র কনসালটেন্ট ফেরদৌসি সুলতানা (ইওসি সার্জন) গর্ভবতীদের জরুরী অস্ত্রোপচার করতেন। কিন্তু গত ৩ সেপ্টেম্বর ডি আই রেজাউল করিম পবিত্র হজ্ব পালন করতে যান। এরপর থেকেই ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিং (ডিএসএফ) প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র গর্ভবতী এবং জরুরী প্রসূতি সেবার (ইওসি) নিয়মিত অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে যায়। জানা গেছে, ডি আই রেজাউল করিম আগামি ২৩ অক্টোবর দেশে ফিরবেন। সূত্রটি আরও জানায়, প্রতি মাসে এ হাসপাতালে প্রায় ৫০-৬০ জন গর্ভবতীকে জরুরী অস্ত্রোপচার ও প্রসূতি সেবা দেওয়া হয়। এরমধ্যে প্রায় অর্ধেক দরিদ্র গর্ভবতী মা ডিমান্ড সাইড ফাইন্যান্সিং (ডিএসএফ) প্রকল্পের আওতায় নগদ তিন হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা পান। কিন্তু এই সেবা কর্যক্রমটি বন্ধ থাকায় দরিদ্র গর্ভবতী মায়েরা সে সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত এক মাসে মাত্র চারজন গর্ভবতীর অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে গিয়ে প্রসবকালীন জরুরী অস্ত্রোপচার করাতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। উপজেলার আড়াইপাড়া গ্রামের খাদিজা বেগম নামের এক প্রসূতি বলেন, ‘আমার হলুদ কার্ড (ডিএসএফ) আছে। ব্যথা উঠলে আমারে নিয়া আমার স্বামী সরকারি হাসপাতালে যায়। ডাক্তার নাই বইলা ক্লিনিকে অপারেশন কইরা আমার বাচ্চা হয়। আমিতো টাকা পাইলাম না বরং ক্লিনিকে আরও টাকা লাগলো। জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. ফেরদৌসি সুলতানা বলেন, বিশেষজ্ঞ কনসালট্যান্ট না থাকায় জটিল অস্ত্রোপচারগুলো করা সম্ভব হচ্ছেনা। আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) নাজমুল হোসাইন বলেন, (ডিএসএফ) প্রকল্পের অধীনে গর্ভবতী মায়েদেরসহ জটিল রোগীদের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে সেবা গ্রহণ করলে আর্থিক সুবিধা পাবেন। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. সামিউল ইসলাম বলেন, জটিলতা নিয়ে আসা গর্ভবতীদের অস্ত্রোপচার সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। তবে স্বাভাবিক গর্ভবতীদের নিয়মিত প্রসূতি সেবা দেওয়া হচ্ছে। টাঙ্গাইল জেলা সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ ইবনে সাঈদ বলেন, হাসপাতালে দু’জন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের অনুপস্থিতির কারণে সাময়িক অসুবিধা হচ্ছে। শিগগিরই ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন চিকিৎসক দেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *