বাঁশখালীর উত্তরের চিংড়াখালী মসজিদে নাম নিয়ে বিরোধ — আদালতে মামলা, মসজিদে অশান্তির অভিযোগ

এস. এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট :বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার উত্তর চিংড়াখালী এলাকার ঐতিহ্যবাহী খানবাড়ি জামে মসজিদকে ঘিরে নামকরণ নিয়ে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছে। শতবর্ষী এই মসজিদের নাম পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি নামাজের সময় অশান্তির সৃষ্টি এবং উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
আদালতে মামলা, মসজিদে অস্থিরতা

স্থানীয় মুসল্লি ও খান পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে মসজিদের ঐতিহাসিক নাম “খানবাড়ি জামে মসজিদ” পরিবর্তনের দাবিতে সঙ্ঘবদ্ধভাবে অশান্তি সৃষ্টি করছে। এ নিয়ে বাগেরহাট বিজ্ঞ মোরেলগঞ্জ সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সরকারি নথি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রমাণিত নাম

খানবাড়ি জামে মসজিদটি স্থানীয় খান পরিবারের অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত। মসজিদের নামে বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ অন্যান্য ইউটিলিটি বিল, ব্যাংক হিসাব এবং গুগল ম্যাপে “খানবাড়ি জামে মসজিদ” নামেই নথিভুক্ত রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এটি নাম পরিবর্তনের কোনো প্রশ্নই ওঠে না।
জুমার নামাজে উত্তেজনা

গত শুক্রবার পোলেরহাট ফাঁড়ি পুলিশের উপস্থিতিতেই জুমার নামাজ চলাকালে মোঃ কিসলু কাজী ও আমিনুল ইসলাম জুলহাস সরদারসহ কয়েকজন মসজিদের নাম পরিবর্তনের দাবিতে উচ্চস্বরে হুংকার দেন। এতে মুসল্লিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে সকলকে আদালতের আদেশ মেনে চলার নির্দেশ দেয়।
হামলা ও হুমকির অভিযোগ

২০২৩ সালে মসজিদের জমিদাতা হাবিবুর রহমান খানের পুত্র ও সাবেক সেনা সদস্য মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান খানের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে, যা এখনো আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া খান পরিবার ও মুসল্লিদের হত্যার হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে।
প্রশাসনের অবস্থান

মোরেলগঞ্জ থানার ওসি মো. রাজিব আল রশীদ জানিয়েছেন, উভয় পক্ষকে আদালতের আদেশ মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয়দের আহ্বান

একাধিক মুসল্লি ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, “ধর্মীয় স্থানের পবিত্রতা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা চাই শান্তি বজায় থাকুক। কেউ যেন মসজিদে অশান্তি সৃষ্টি না করে।”

এই ঘটনার জেরে এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে চাপা উত্তেজনা। স্থানীয় প্রশাসন, মুসল্লি এবং এলাকাবাসীরা শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় প্রহর গুনছেন।** ## **
**ছবি সংযুক্ত আছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *