পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় কাশ্মীরজুড়ে ব্ল্যাকআউট, দাবি ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতশাসিত জম্মু-কাশ্মির ও পাঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা লক্ষ্য করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কাশ্মীরজুড়ে ব্ল্যাকআউট এবং সাইরেনের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খবর এনডিটিভি। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ৯টার দিকে কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্তের আরএস পুরা, আরনিয়া, সাম্বা, হিরানগরে পাকিস্তানি বাহিনী হামলা চালিয়েছে বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাত ৯টার কিছু আগে জম্মু-কাশ্মিরজুড়ে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয়রা দাবি করেছেন। এর পরপরই শহরে সাইরেন বাজিয়ে ও ব্ল্যাকআউট করে বাসিন্দাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের মোবাইল ফোনে ধারণ করা পাকিস্তানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও এনডিটিভির কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। ভিডিওতে দেখা যায়, জম্মু-কাশ্মিরের আকাশে আলোর ঝলকানির পর বিস্ফোরণ ঘটছে। ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে পাকিস্তানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনে বাধা দেওয়ার সময় এই দৃশ্য দেখা যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জম্মু-কাশ্মিরের কিছু এলাকায় মোবাইল ফোনের কিছু পরিষেবা সীমিত করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সেখানকার স্থানীয়রা তাদের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হচ্ছেন। পাকিস্তানের এই হামলায় জম্মু ও কাশ্মিরের বেশিরভাগ সীমান্ত অঞ্চল এখন ব্ল্যাকআউটের কবলে রয়েছে। জম্মু শহরের গুজ্জর নগর সেতুর কাছে এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেন, তিনি জম্মু বিমানবন্দরের কাছে ১৬টি বস্তু পড়ে থাকতে দেখেছেন। গত মঙ্গলবার রাত ১টার পর ‘অপারেশন সিঁদুর’ নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থাপনায় এই হামলা চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও গুলিবর্ষণে নিহত হন ৩১ জন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৫৭ জন।

অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে (এলওসি) পাকিস্তানি সেনারা গোলাবর্ষণ করে। বার্তা সংস্থা এএফপিকে উদ্ধৃত করে বিবিসি বলেছে, কাশ্মীরজুড়ে ব্ল্যাকআউট চলছে, লোকজনকে দৌঁড়াদৌড়ি করতে দেখা গেছে। সাইরেনের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন স্থানীয়রা। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি সূত্র বিবিসিকে জানিয়েছে, জম্মুতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়েছে। এজন্য শহরজুড়ে এয়ার সাইরেন বাজে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেকগুলো সামরিক স্থাপনাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করে। এসব ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের সব কটিই ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম (আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা) নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু, পাঠানকোট, অমৃতসর, কাপুরথালা, জলান্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাতিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফালোদি, উত্তরলাই, ভুজসহ ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে সামরিক বাহিনীর অনেকগুলো স্থাপনা লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল পাকিস্তান। সেগুলোর ধ্বংসাবশেষ এখন সংগ্রহ করা হচ্ছে। এদিকে, ভারতের হামলার পর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানান, এর মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফাল, একটি রাশিয়ার তৈরি সু-৩০ ও অন্যটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান। সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান সোভিয়েত আমলে তৈরি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *