মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির হাতে জিম্মী প্রতিষ্ঠানগুলো বাগেরহাটের শরণখোলায় কেনা প্রশ্নপত্র দিয়ে অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা সম্পন্ন
বাগেরহাট প্রতিনিধি :বাগেরহাটের শরণখোলায় সরকারী নিয়ম-বিধি উপেক্ষা করে কেনা প্রশ্ন পত্র দিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। স্থানীয় শিক্ষক সমিতিও অধিক লাভের আশায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর ২০১৫ সালের অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষা যোগসাজসে বাজার থেকে সিলেবাস বহির্ভুত এবং অসম্পূর্ন প্রশ্নপত্র ক্রয় করে সম্পন্ন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ ছাড়া সমিতির বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগুলোকে প্রভাবিত করে শিক্ষার্থীদের মাঝে নি¤œ মানের গাইড বই বিক্রিরও অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে শরণখোলা উপজেলার ১৪ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণসহ অধিকাংশ শিক্ষক কোন না কোন ভাবে শিক্ষক সমিতি দ্বারা প্রভাবিত। এই সুযোগে সমিতির প্রভাবশালী একটি অংশ ব্যবসার উদ্দেশ্যে প্রধান শিক্ষকদের ম্যানেজ করে প্রতিষ্ঠান গুলোয় প্রশ্নপত্র বিক্রি করছে যা সিলেবাস বহির্ভুত, ভুলে ভরা এবং অসম্পূর্ন। উপজেলার তাফালবাড়ি স্কুল এ্যান্ড কলেজের ১০ শ্রেনীর ছাত্রী রাবেয়া আক্তার মিশু এবং একই শ্রেণীর মোঃ নাইম জোমাদ্দার জানান, অর্ধ বার্ষিকী পরীক্ষায় তাদের কম্পিউটার, উচ্চতর গনিত ও শারীরিক শিক্ষা সাবজেক্টে রচনামূলক (সৃজনশীল) প্রশ্ন পত্রের পরীক্ষা হয় নি। শুধু ৩৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের পরীক্ষা হয়েছে। রচনামূলক প্রশ্নপত্র আসেনি বলে তাঁেদর জানানো হয়েছে। একই প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুল বুস্রা তুবা জানায়, তাঁদের গনিতের প্রশ্ন হয়েছে সিলেবাসের বাহির থেকে। অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে তাদের ইংরেজী দ্বিতীয় পত্রে সবই অপঠিত বিষয়, কোন প্রশ্নই কমন পড়েনি।
তাই তাঁদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হবে। তাফালবাড়ি স্কুল এ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষিকা হাফিজা বেগম জানান, হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের সাথে পরীক্ষার নামে প্রহসন করা হয়েছে। প্রশ্নপত্র বানিজ্যের শিকার হয়েছে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীরা লেখা-পড়ায় নিরুৎসাহিত হচেছ। একই শ্রেণীর কারো পরীক্ষা হচেছ ৭০ নম্বরের কারো হচেছ ৩৫ নস্বরের। এ রকমে পরীক্ষার ফলাফলে স্থান নির্ধারণ কি ভাবে সম্ভব ? উপজেলার সুন্দরবন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, সিলেবাস অনুযায়ী কোন বিষয়েরই প্রশ্নপত্র হয়নি। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তাঁদের ছোট হতে হয়েছে। আগামীতে নিজেদের তৈরী করা প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করবেন তিনি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রায়েন্দা পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুলতান আহম্মেদ জানান, প্রশ্ন পত্রগুলো প্রতিষ্ঠানে পৌছানোর পর শিক্ষকদের পরীক্ষা করে দেখা উচিৎ ছিলো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হামিদ ভুইয়া জানান, নিয়ম হচ্ছে প্রশ্ন পত্র হাতে তৈরি করে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠান গুলো পরীক্ষা নিবে। কিন্তু এর ব্যত্যায় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ অতুল মন্ডল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমানিত হলে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।