পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাপাহারবাসী
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি : নওগাঁ পল্লী বিদ্যুত সমিতির পতœীতলা জোনাল অফিসের অফিস কর্তৃপক্ষ, তার কর্মচারী, ইলেকট্রিশিয়ান, টেকনিশিয়ানদের অত্যাচারে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার বিদ্যুত গ্রাহকগন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। হর হামেশা তারা বিভিন্ন গ্রাহকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন, অতিরিক্ত বিলের ভয় এলাকার দালালদের দিয়ে হয়রানী সহ বিভিন্ন হুমকী দিয়ে আতংকের মধ্যে রেখেছে।
সম্প্রতি তারা উপজেলা সদরে এসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানের নামে অযৌত্তিক ধুয়া তুলে নিরিহ কিছু গ্রাহকের বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে তাদেরকে মানবিক কষ্টের মধ্যে ফেলেছে। গত ১৭জুন সদরের আবুল হোসেন নামের এক গ্রাহকের কয়েক মাসের বিদ্যুত বিল বকেয়া রয়েছে মর্মে অভিযোগ এনে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে গ্রাহক আবুল হোসেন তার কোন বিল বকেয়া নেই বলে পরিশোধিত বিলের কপি বাসায় আনতে গিয়ে সে বিলের কপি নিয়ে ফিরে না আসতেই বিদ্যুতের লোকজন তার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলে গেছে। এছাড়া সোহেল নামের এক গ্রাহকের নিকট এক মিনিটের মধ্যে বকেয়া বিল সহ তাদের উৎকোচের টাকা দিতে না পারলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে গ্রাহককে ধমক দেয়ার পর তাদের দেয়া সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তারা সেখানেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। সদরের পোষ্ট অফিস পাড়ায় জুয়েল নামের এক গ্রাহকের মুক্তিযোদ্ধা অসুস্থ্য পিতা শয্যাশায়ী অবস্থায় দেখেও এক মাসের বকেয়া বিলের জন্য বিদ্যুতের লোকজন তার বাসার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। প্রচন্ড গরমে পিতার অসাহায়ত্ব অবস্থা দেখে তার ছেলে জুলফিকার আলী (ড্যানো) অনুনয় বিনয় করে বিদ্যুতের লোকজনের হাত ধরে সংযোগটি পুনরায় লাগানোর অনুরোধ করলে তারা মহুর্তে অগ্নীমুর্তি ধারণ করে তেলে বেগুনে জ্বলে পরে পুলিশকে নিয়ে গিয়ে ওই বাড়ীর মিটার ও ড্রপতার খুলে স্থায়ীভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে অফিসে নিয়ে গেছে এবং যে লোক তার বাড়ীতে পার্শ্ব সংযোগ দিবে পরবর্তীতে সে ব্যক্তির ও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে হুমকী দিয়ে যায়। বর্তমানে অসহায় মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবার পবিত্র রমাজান মাসে প্রচন্ড গরমে বিদ্যুতের অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পল্লী বিদ্যুতের লোকজন ও জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান শামীম হোসেন নামের স্থানীয় একজন দালালকে সাথে নিয়ে কার বাসায় চার্জার ভেন, অটো ভেন চার্জ করা হয় এসব খুজে তাদের বাসায় গিয়ে বানিজ্যিক বিলের ভয় দেখিয়ে ভেন চার্জ করার জন্য অতিরিক্ত টাকা আদায় করে চলেছেন। এছাড়া উপজেলা সদর ও সদরের বাহিরে যে সমস্ত বাড়ীতে চার্জার ভেন রয়েছে তাদের নিকট থেকে মিটারে অতিরিক্ত বিল কমানোর চুক্তিতে একটি ভেনের জন্য রিডিংম্যান ৫০০টাকা ও বিলম্যান ২০০টাকা করে আদায় করে চলেছে বলেও একধিক অভিযোগ রয়েছে। অতি সম্প্রতি পল্লী বিদ্যুতের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান ওই দালালকে সাথে নিয়ে বাজারে অবস্থিত মুন ডিজিটাল স্টুডিওতে গিয়ে বকেয়া বিলের চাপ দিয়ে মহুর্তে তার বকেয়া বিল পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে বলে হুমকী দেয়। স্টুডিও মালিক রয়েল এর জন্য ১ঘন্টা সময় চাইলে তারা মহুর্তে টাকা না পেয়ে তার সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এসময় স্টুডিও মালিক সাংবাদিক রয়েল স্থানীয় ওই দালালকে কেন সাথে করে এনেছে জিজ্ঞাস করলে তার দ্বারা তাদের অনেক কাজ হয় বলে ওই ইঞ্জিনিয়ার কামরুজ্জামান রয়েলকে জানান। তারা কোন গ্রাহককে বকেয় বিল পরিশোধের একটুকুও সময় না দিয়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলেছে। সাধারণ বিদ্যুত গ্রাহকদের দাবী কোন কারনে হয়তো তাদের এক ,দুটি বিল পরিশোধ হয়নি এজন্য তাদের সময় দেয়া প্রয়োজন বিদ্যুতের লোকজন এসে মহুর্তে তাদের বকেয়া সহ তাদের মন খুশি করা অর্থ না পেলেই তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলে যাচ্ছে। অথচ কোন গ্রাহক নিজেদের প্রয়োজনে বিদ্যুতের যে কোন সমস্যার জন্য বিদ্যুত অফিসে আবেদন করলে বিদ্যুতের লোকজন গ্রাহকদের মাসের পর মাস তাদের কোন কাজ না করে অযথা অফিসে ঘুরাচ্ছে। বিশেষ করে নতুন সংযোগ ও মিটারে ভৌতিক বিলের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত ফি এর সাথে মোটা অংকের অর্থ তাদের পটেকে না গেলে কোন নতুন সংযোগ পাওয়া এবং কয়েক মাসেও মিটার পরিবর্তন করা যায় না। যার তদবীর যত বেশী জোরালো তার কাজ ততই আগে হয়ে থাকে। তদবীর করতে না পারলে বছর ছয় মাসেও ওই গ্রাহকের কাজ হয়না। এজন্য সম্প্রতি পল্লী বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ সাপাহার উপজেলা সদরে মাইকিংএর মাধ্যমে নির্ধারিত অফিস ছাড়া কোন দালালের হাতে কোন টাকা না দেয়ার জন্য জনসাধারণকে অবহিত করেন।
গ্রাহক সেবা পাওয়াতো দুরের কথা পল্লী বিদ্যুতের লোকজনের অত্যাচার ও হুমকী ধামকীতে উপজেলার গ্রাহকগন এখন বিদ্যুতের বিষয়ে অতি আতংকে দিন কাটাচ্ছে।
এ বিষয়ে সাপাহার ও পতœীতলা বিদ্যুত কর্তৃপক্ষের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কোন মতে তাদের সাথে ফোনে কথা বলা যায়নি।