বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি-প্রক্টরদের পদত্যাগের হিড়িক
ডেস্ক রিপোর্ট: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর দেশত্যাগ ও সরকার পতনের পর থেকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। কোথাও কোথাও পদত্যাগ করেছেন প্রক্টর, প্রভোস্টসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় সবাই। শনিবার (১০ আগস্ট) পর্যন্ত দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, সহ-উপাচার্য হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ বর্তমান প্রশাসনের ৩০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. সুলতান-উল-ইসলাম। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, সহ-উপাচার্য হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হকসহ বর্তমান প্রশাসনের ৩০ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।
এর আগে বুধবার উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদত্যাগের জন্য ২৪ ঘণ্টা সময় বেধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা।
শুক্রবার পদত্যাগ করেন দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম কামরুজ্জামান। একই দিন পদত্যাগপত্র জমা দেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মামুনুর রশিদ ও ছাত্র উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমান।
ইতোমধ্যে প্রশাসনের বিভিন্ন পদে থাকা আরও কয়েকজন শিক্ষক পদত্যাগ করার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন রংপুরে অবস্থিত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাসিবুর রশীদ।
গত ১৬ জুলাই শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে নিহত হন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। ওই দিন ভিসির পদত্যাগের দাবিতে তার বাসভবন ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে নিরাপদ স্থানে সরে যান হাসিবুর রশীদ।
শনিবার ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেধে দেওয়া একদিন সময়ের মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি, ছয়টি আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষরা পদত্যাগ করেন।
একই দিন পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল। একই সঙ্গে সাতটি হলের প্রভোস্টরাও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের অধ্যাপক বিললাহ হোসেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের অধ্যাপক আকরাম হোসেন, বিজয় একাত্তর হলের ড. আব্দুল বাছির, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ড. আব্দুর রহিম, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের অধ্যাপক ইকবাল রউফ মামুন, রোকেয়া হলের ড. নিলুফার পারভীন এবং শামসুন নাহার হলের ড. লাফিফা জামাল।
সর্বশেষ শনিবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে পদত্যাগ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালাম। একই সঙ্গে পদত্যাগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির সহ–উপাচার্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া।
এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করায় নোবিপ্রবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ইতোমধ্যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রক্টর অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক, আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. ফিরোজ আহমেদ ও অতিরিক্ত পরিচালক মোহাইমেনুল ইসলাম, ভাষা শহিদ আবদুস সালাম হলের প্রভোস্ট ড. কাউসার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট ড. রুহুল আমিন, হযরত বিবি খাদিজা হলের প্রভোস্ট ড. মো. রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. অবন্তী বড়ুয়া, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট ড. মহিনুজ্জামান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, প্রক্টরিয়াল বডি ও সব হলের প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শুক্রবার দুপুর ১২টার মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।