বেনজীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি সংসদে

ডেস্ক রিপোর্ট : সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে জাতীয় সংসদে। কারা কারা বিদেশে টাকা পাচার করেছেন, বাড়ি করেছেন, পানামা পেপারসে কাদের নাম এসেছে, সেসব সংসদে প্রকাশ করারও দাবি জানানো হয়েছে।

গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিন জন সংসদ সদস্য এসব দাবি জানান।
বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বেনজীরের দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আরও যারা বেনজীর আছেন, তারা আশকারা পাবেন। বেনজীর আহমেদের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সম্পাদকীয় পড়ে শুনিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলেই কী বিচিত্র।’

দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেনজীরের বিপুল সম্পদের তথ্য তুলে ধরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘বেনজীর যখন র‌্যাবের ডিজি ও ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন তখন হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেককে ভয় দেখিয়ে জমি কিনেছেন। কয়েক দিন আগে ৮০ কোটি টাকা ব্যাংক থেকে তুলে বিদেশে চলে গেলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বেনজীর আহমেদ বিদেশে চলে গেছেন কি না, তিনি জানেন না। তিনি জানবেন না কেন? সারা দেশে আলোচিত এই ব্যক্তি ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তা সরকারকে জানায়নি, তাহলে সব কর্মচারীকে বরখাস্ত করা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের কোনও নেতা যখন চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, তখন বিমানবন্দরে তাদের অন্তত দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। আর এ রকম একজন ব্যক্তি বিদেশে চলে যাবেন, সরকার জানবে না, তা হতে পারে না। এত বাহিনী, এত এজেন্সি তারা কী খবর রাখে?’

সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ বলেন, ‘সরকারের দায় নেই বললে মানুষ তা মানবে না। কারণ, এই সরকারের আমলে বেনজীর আহমেদের পদোন্নতি, পোস্টিং হয়েছে। এই সরকারের আমলে দুর্নীতি করে তিনি এসব সম্পদ গড়েছেন। তার দুর্নীতি প্রমাণিত হয়েছে।’

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, ‘বেনজীর, আজিজ, আনোয়ারুল আজীমের ঘটনায় আমি নিজেও নির্বিকার। লাখ লাখ আজিজ, বেনজীর সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে।’

লতিফ সিদ্দিকীর পর বক্তব্য দিতে দাঁড়ান সরকারি দলের সদস্য তারানা হালিম। তিনি বলেন, যার (বেনজীর) কথা বলা হলো এতক্ষণ, তার মন খারাপ হলে ১০টা বাড়ি কিনতেন। আমাদের মন খারাপ হলে আমরা বড়জোর দু একটা শাড়ি কিনতে পারি। ওনার মন খারাপ হলে অনেক বড় বড় কিছু কিনতে পারেন।’

বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হয়ে থাকলে ঘুষ খাওয়ার সময় বুক চুরমার হয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তারানা হালিম বলেন, ‘যানবাহনে সিন্ডিকেট, রাস্তাঘাটে সিন্ডিকেট, বাজার নিয়ন্ত্রণে আসছে না। ওমুক খানে সিন্ডিকেট, চালের গুদামে সিন্ডিকেট, বস্ত্র বিতরণে সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট কারা? আমরা জানতে চাই, নাম প্রকাশ করা হোক। কাদের পানামা পেপারসে, পেরাডাইস পেপারে নাম আছে, আমরা জানতে চাই।’ কানাডায় বেগম পাড়ায় কার কার বাড়ি আছে, কে কে টাকা পাচার করেছে, সবার নাম সংসদে প্রকাশ করার দাবি জানান তারানা হালিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *