সিএমপি ডবলমুরিং মডেল থানার অভিযানে চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে ১৪,৯০,০০০/- টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক গ্রেফতার, আত্মসাৎকৃত ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার ।
মশিউর রহমান : উপ-পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম) জনাব নিহাদ আদনান তাইয়ান মহোদয়ের সার্বিক দিকনির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার জনাব মোঃ আশরাফুল করিম এবং সহকারী পুলিশ কমিশনার জনাব মুকুর চাকমা এর তত্ত্বাবধানে, ডবলমুরিং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব ফজলুল কাদের পাটোয়ারীর নেতৃত্বে, এসআই ইমান হোসেন, এসআই কহিনুর ইসলাম, এএসআই নেছার উদ্দিন, এএসআই রাসেল মিয়া, এএসআই খাজা নাজিম উদ্দীন, এএসআই রিয়াজুল ইসলামদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস আভিযানিক টিম কাস্টমস অফিসে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে ১৪ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎকারী আতিকুর রহমান চৌধুরীকে ফেনী জেলার পরশুরাম থেকে গ্রেফতার করেন।
চুয়াডাঙ্গার অধিবাসী বাদি আকাশ আলীর চাচা শামছুদ্দিনের সাথে গ্রেফতারকৃত আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রঃ আনিছুর রহমানের পরিচয় হয় চুয়াডাঙ্গায়। আতিকুর রহমান তার নিজের নাম আনিছুর রহমান বলে জানায়। বাদির চাচা শামছুদ্দিনের সাথে পরিচয়ের একপর্যায়ে বিবাদি আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রঃ আনিছুর রহমান চট্টগ্রাম কাস্টমস অফিসে ডেসপাস রাইটার হিসেবে লোক নিয়োগ দিতে পারবে বলে শামছুদ্দিনকে জানায়। শামছুদ্দিন তার ভাতিজা আকাশ আলীকে চাকুরি দেয়ার জন্য বললে প্রতারক আনিছুর রহমান ১৫ লক্ষ টাকায় চাকুরি দিতে পারবে বলে জানায়। প্রতারক আনিছুর রহমানের কথায় শামছুদ্দিন ভাতিজা আকাশ আলীর চাকুরির জন্য আশ্বস্ত হয়ে ১৫ লক্ষ টাকা দিতে রাজী হয়। বিবাদির কথামতো আকাশ আলী ১৪/১২/২০২৩ খ্রি. পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার মোড়স্হ এশিয়ান হোটেলে আসলে প্রতারক আতিকুর রহমান চৌধুরী বাদি আকাশ আলী থেকে চাকুরীর প্রসেসিং ফি বাবদ ১৫,০০০/- টাকা নেয়।
পরবর্তীতে জয়েনিং লেটার এর কথা বলে বাদির কাছ থেকে বিকাশ নাম্বারে ২০,০০০/- টাকা,পরের ধাপে এসএ পরিবহন, আগ্রাবাদ শাখার মাধ্যমে নগদ ১,২০,০০০/- টাকা গ্রহণ করে। এর পর বিবাদি নগদ একাউন্টের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ২৫,০০০/- টাকা ও ৫৫,০০০/- টাকা গ্রহণ করে। বিবাদির কথামতো সর্বশেষ ১৭/০১/২০২৪ খ্রি. চট্টগ্রামের অলংকার মোড়স্থ এশিয়ান হোটেলে চাকুরির জয়েনিং লেটার দেখিয়ে অবশিষ্ট ১২,৫৫,০০০/- টাকা দিতে বলে।
তখন বাদি, বিবাদিসহ চট্টগ্রামের কাজীর দেউরি এসএ পরিবহনে গিয়ে ১২,৫৫,০০০/- টাকা উত্তোলন করে। আতিকুর রহমান চৌধুরী প্রঃ আনিছুর রহমান বাদিকে আগ্রাবাদ কাস্টমস হাউজে যেতে বলে বাদির চাচা শামছুদ্দিনকে সাথে নিয়ে বিবাদি আগ্রাবাদ সরকারী কার্য ভবন-১ এর দিকে নিয়ে বাদির চাচা শামছুদ্দিন থেকে ১২,৫৫,০০০/- টাকা নিয়ে ব্যাংকে জমা দেওয়ার কথা বলে আত্মগোপনে চলে যায়। এই ঘটনায় বাদির এজাহারের প্রেক্ষিতে ডবলমুরিং মডেল থানায় মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজু পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমান হোসেন ও তার টিম মামলার ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করেন। ফুটেজসহ প্রাপ্ত অন্যান্য তথ্যের ভিত্তিতে কথিত আনিছুর রহমানের পূর্ণ পরিচয় সনাক্ত হয়। অবশেষে বিবাদির অবস্থান সনাক্তপূর্বক ফেনী জেলার পরশুরাম থানাধীন দক্ষিণ গুথুমা থেকে পরশুরাম থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযুক্ত আতিকুর রহমান চৌধুরী কে গ্রেফতার করেন এবং তার হেফাজত থেকে আত্মসাৎকৃত ৪,৫০,০০০/- (চার লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা উদ্ধার করেন।
এসময় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি বাদিকে তার নাম মোঃ আনিছুর রহমান পরিচয় দিলেও প্রকৃতপক্ষে তার নাম মোঃ আতিকুর রহমান চৌধুরী বলে জানা যায়। মূলত প্রতারনার কৌশল হিসেবে একেক সময় সে একেক নাম ব্যবহার করে। পরবর্তীতে বন্দর থানাধীন ফকিরহাটস্থ বিবাদির ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে একাধিক অটো সীল, গোল সীল, আনিছুর রহমান নামীয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক ইস্যুকৃত ০১টি আইডি কার্ড, চাকুরীর আবেদন ফর্ম, বাদির পরীক্ষার প্রবেশপত্র, ডেসপাস রাইটার পদের পরীক্ষার উত্তরপত্র (এমসিকিউ) ২ সেট, ডেসপাস রাইটার পদের মৌখিক পরীক্ষার নাম নির্ণয় ফর্ম, বাদির রোল নম্বর সম্বলিত ডেসপাস রাইটার পদের ফলাফল, বাদির স্বাস্থ্য বিষয়ক সার্টিফিকেট সেট, জনাব মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত কমিশনার কাস্টম ও ভ্যাট এর স্বাক্ষর, সীল ও স্মারক সম্বলিত নিয়োগাদেশ, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ০৩টি খাম, সই ও সীল জাল করার চেষ্টার নমুনা, প্রতারনার কাজে ব্যবহৃত ০১টি নকিয়া বাটন মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।