বগুড়ায় তদারকির অভাবে পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র জবাই করা হচ্ছে গবাদি পশু : বিক্রি হচ্ছে পঁচা বাঁসি মাংস
বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়া পৌরসভায় প্রয়োজনের তুলনায় কসাইখানা নেই। ১৯টি হাট বাজারের বিপরীতে রয়েছে মাত্র একটি কসাইখানা। সেটির রয়েছে নানা সমস্যা। এদিকে পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে নেই নিয়োগপ্রাপ্ত পশু ডাক্তার। যে কারনে নিয়ম না থাকলেও পরীক্ষা ছাড়াই যত্রতত্র জবাই করা হচ্ছে গবাদি পশু।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২১টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত বিশাল আয়তনের বগুড়া পৌরসভায় ১৯টি হাট বাজার রয়েছে। এর মধ্যে ফতেহ আলী বাজার, রাজা বাজার, মালতিনগর বাজার, গোদারপাড়া বাজার, নামাজগড় বাজার, নাটাইপাড়া (বউ বাজার), মাটিডালি বাজার, কালিতলা হাট, সুলতানগঞ্জ হাট, মাদলা হাট অন্যতম। বাজার পরিদর্শক মো. আব্দুল হাই জানান, বগুড়া পৌরসভার ১৯টি হাট বাজারের মধ্যে ইজারাভুক্ত রয়েছে ১৬টি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯টি হাট বাজার থাকলেও কসাইখানা রয়েছে মাত্র একটি। সেটির অবস্থান শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চকসুত্রাপুরে। ওই কসাইখানার টিন সেড ছাউনি ছিদ্র হয়ে পানি পড়ে। কয়েকটি টিউবওয়েল রয়েছে যার কোনটি অচল, কোনটি সচল। ড্রেনে ময়লা আবর্জনা পানি জমে থাকে। বিভিন্ন কারনে কয়েকটি বাজারের ব্যবসায়ীরা এই কসাইখানা ব্যবহার করেন। বেশির ভাগ বাজারের মাংস ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন স্থানে গবাদি পশু জবাই করে থাকেন। পশু ডাক্তার না থাকায় পরীক্ষা ছাড়াই জবাই করা হচ্ছে গবাদী পশু।
এদিকে তদারকি কম থাকায় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পচা বাঁসি মাংস বিক্রির করে থাকে বিভিন্ন বাজারে। গত ১২ মে ফতেহ আলী বাজারে পঁচা বাঁসি মাংস বিক্রির দায়ে দুই ব্যবসায়ীর ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। এছাড়া কয়েক কেজি মাংসও জব্দ করা হয়।
ফতেহ আলী বাজারের ব্যবসায়ী নুর আলম শেখ, বিক্রেতা গোফ্ফার হোসেন, লালু মিয়ার সঙ্গে কথা হয় শুক্রবার। তারা জানান, চকসুত্রাপুরের কসাইখানার পরিবেশ আরো ভালো করতে হবে। টিনের ছাউনি ছিদ্র হয়ে গেছে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশ না থাকায় বাজারেই জবাই করা হয় গরু।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগে গরু, ছাগল, ভেড়া পরীক্ষা করা হতো। গোশতে পৌরসভার আলাদা আলাদা সীল দেয়া হতো। এখন তা দিতে কাউকে দেখা যায়না।
পৌরসভার স্বাস্থ্য পরিদর্শক মো. শাহ আলী খান জানান, বগুড়া পৌরসভায় কসাইখানা রয়েছে মাত্র একটি। হাট বাজারের তুলনায় আরো কসাইখানা তৈরী করা প্রয়োজন। যার কারনে নিয়ম না থাকলেও শহর ও শহরতলীর বিভিন্ন স্থানে জবাই করা হচ্ছে গবাদি পশু। পশু ডাক্তারের একটি পদ রয়েছে, ওই পদে নিয়োগপ্রাপ্ত কোন ডাক্তার নেই। গত দুই বছর ধরে ওই পদে একজনকে চুক্তিভিত্তিক দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। একটি মাত্র কসাইখানা হওয়ায় এবং দুরত্বের কথা বিবেচনা করে ওই এলাকার আশপাশের বাজারের ব্যবসায়ীরা কসাইখানা ব্যবহার করেন। দুরের বাজারের ব্যবসায়ীরা কসাইখানায় না যেয়ে বিভিন্ন স্থানে জবাই করছে গবাদি পশু।
বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র আমিনুল ফরিদ জানান, চকসুত্রাপুরের একমাত্র কসাইখানাটিই এখন ব্যবহার হচ্ছে। একটি কসাইখানা হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে গবাদী পশু জবাই করা হচ্ছে। আরো কসাইখানা তৈরীর প্রয়োজন রয়েছে। জায়গা নির্ধারণ করে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন উন্নতমানের কসাইখানা তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হবে।