অবরোধে যানজটে নাকাল চট্টগ্রামবাসী
ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপি-জামায়াত জোটের ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রাম মহানগরীতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। স্কুল, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়, সরকারি-বেসরকারি,স্বায়ত্তশাষিত প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা, কলকারখানা, বন্দর, বিমানবন্দরসহ সব ধরণের প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান থাকায় নগরীর প্রতিটি সড়কে যানজট তীব্র আকার ধারণ করে।
আজ সকালে কর্ণফুলী ব্রিজের সংযোগ সড়ক, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর,ষোলশহর ২ নম্বর গেট, জিইসি,ওয়াসা মোড়, প্রবর্তক মোড়, কাতালগঞ্জ, চকবাজার ঘুরে জামালখান এলাকায় আসতে সর্বত্র গাড়ির তীব্র চাপ পরিলক্ষিত হয়। ষোলশহর ২ নম্বর গেট, জিইসি থেকে ওয়াসা মোড় ও চকবাজার কলেজ রোডে যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে রীতিমতো হিমসিম খেতে হচ্ছিল।
ওয়াসা মোড়ের আগে দায়িত্বরত এক ট্রাফিক সার্জেন্টের সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আজ সকাল থেকেই নগরীর প্রতিটি সড়কে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিকের চেয়েও বেশি মনে হচ্ছে। এখানে আমরা তিন জন সার্জেন্টসহ ছয় জন ট্রাফিক পুলিশ যানজট সামলাতে হিমসিম খাচ্ছি।
অবরোধের কোনো প্রভাব আছে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন,অবরোধ কার্যকর হলে তো আমাদের এতগুলো ট্রাফিক পুলিশকে এভাবে ঘাম ঝরাতে হতো না। আমাদের ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী নগরীর সব সড়কের চিত্রই এমন।
এদিকে, অবরোধকারী জোটের কোনো নেতাকর্মীকে আজ সকাল থেকে মাঠে দেখা যায়নি। কোথাও কোনো পিকেটিং বা ঝটিকা মিছিলের খবরও মেলেনি। তবে নগর আওয়ামী লীগ তাদের ঘোষিত ১৯ গুরুত্বপূর্ণ স্পটে শান্তি সমাবেশ করে অবস্থান অব্যাহত রেখেছে। এ প্রতিবেদকের পরিদর্শনের রুটে কর্ণফুলী শাহ আমানত ব্রিজ চত্বর, বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রবেশমুখ, মুরাদপুর, ওয়াসা মোড় ও চকবাজার গুলজার মোড়ের মতি টাওয়ার চত্বরে আওয়ামী লীগকে সমাবেশ করতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম কলেজ প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগ বিরোধী দলের নাশকতা ও অরাজকতা-বিরোধী সমাবেশ করছিল। নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ নেতৃবৃন্দ ঘুরে ঘুরে প্রতিটি স্পটে যাচ্ছেন এবং চট্টগ্রামে সরকারের ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ ও বিরোধী দলের আন্দোলনের নামে সহিংস কর্মকা-, জ¦ালাও-পোড়াও, ভাঙচুরসহ সকল নাশকতার চিত্র সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরছেন।
সংসদ সদস্য ও নগর আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন বাচ্চু দুপুরে বাসস’কে জানান, ‘নগর আওয়ামী লীগ ঘোষিত ১৯ স্পটের ছয়টি আমার নির্বাচনী এলাকায়। গতকালের মতো আজও প্রতিটি স্পটে শান্তি সমাবেশ হচ্ছে। আমি প্রতিটি স্পটে যাচ্ছি এবং আমাদের দলের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষকে আশ^স্ত করছি। তাদের আতঙ্কিত না হয়ে সাহসের সাথে অপশক্তিকে মোকাবেলা করার প্রেরণা দিচ্ছি।’
তিনি বলেন,‘গতকাল শুধুমাত্র আমার নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করতে তীব্র যানজটের কারণে সাড়ে চার ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। আজ তার চেয়েও অনেক বেশি মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। মানুষ তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং নগরী শতভাগ প্রাণচঞ্চল। বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলে সরকার পতনের লক্ষ্যে তাদের আন্দোলনে যে মানুষের সমর্থন নেই তা সহজেই প্রমাণিত হয়।’
স্পটগুলোর বাইরেও আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
এছাড়া, প্রতিটি মোড়ে আমাদের, বিশেষকরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সজাগ পাহারা অব্যাহত রেখেছেন। ফলে কোনো অপশক্তি মাঠে নেমে কোনো নাশকতা করার সাহস পাচ্ছে না।’