অ্যান্টিভেনম-সংকটের কারণে বিপাকে সাপে কাটা রোগী

সাইফুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহে বাড়ছে সাপের উপদ্রব। প্রায় প্রতিদিনই সাপে কাটা রোগী আসছে হাসপাতালে। একই দিনে জেলার শৈলকুপা উপজেলার দিঘল গ্রামের তাবাচ্ছুম তমা (৬) এবং হরিণাকুন্ডু উপজেলার দুর্লভপুর গ্রামের সিনথিয়া (৫) নামের দুই শিশু সাপে কেটে মারা গেছে। এ নিয়ে চলতি সেপ্টেম্বর মাসেই জেলায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিকে ঝিনাইদহ সহ পাশ্ববর্তি মাগুরা,চুয়াডাঙ্গা,মেহেরপুর জেলার হাসপাতালেও কোন এন্টিভেনম না থাকায় সাপে কাটা রোগীরা পড়েছে চরম বিপাকে। যদিও চিকিৎসকেরা বলছেন, এ সংকট সারা দেশে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চলতি বছর জেলায় ১৭ জন সাপে কাটা রোগী মারা গেছেন।

সাপে কাটা রোগী নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবক আব্দুল্লাহ মারুফ জানান, ‘প্রায় পাঁচ বছর হলো কাজ করছি। এ সময়ে তিন শতাধিক সাপের দংশনের রোগীর পাশে থেকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। এর মধ্যে ৭০ জনের বেশি বিষাক্ত সাপের দংশনের রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, আর তিনজন মারা গেছেন। আমি নিজেও বিষাক্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে অ্যান্টিভেনম নিয়েছি।’

মারুফ জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টার চেষ্টা করছে দেশে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন করার। ভারতের তামিলনাড়ু থেকে অ্যান্টিভেনম আমদানি করা হয়। এ ছাড়া ওষুধ কোম্পানি ইনসেপ্টা অ্যান্টিভেনমের কাঁচামাল আমদানি করে দেশে ম্যানুফ্যাকচারিং করে।

এ বিষয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, এ মুহুর্তে জেলার মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০ ভায়াল এন্টিভেনম আছে যা দিয়ে দু’জন রোগীর চিকিৎসা দেয়া যাবে। এ ছাড়া কালিগঞ্জে আছে ৪০ ভায়াল, কোটচাঁদপুরে ২০ ভায়াল, হরিণাকুন্ডুতে ২০ ভায়াল তবে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল এবং শৈলকুপা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কোন এন্টি ভেনম নেই। তিনি জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চাহিদা দেয়া হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন, ঢাকা থেকে অ্যান্টিভেনম আসতে ১০ দিন সময় লাগবে। আগে চাহিদা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পেয়ে যেতাম। এখন সংকট থাকতে পারে। এ কারণে সাপে কাটা রোগী এলে বাইরে থেকে অ্যান্টিভেনম কেনার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সিভিল সার্জন জানান,একজন সাপে কাটা রোগীর জন্য ১০ ভায়াল এন্টিভেনম একবারে পুশ করতে হয়। তিনি সাপে কাটা রোগীদের ওঝা কিংবা কবিরাজের কাছে না নিয়ে সোজা হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেণ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *