যেখানে সেখানে পুকুর খনন করাই আবাদী জমি পানির নিচে অভিযোগ কৃষকদের

সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : এলাকায় যেখানে সেখানে পুকুর খনন করার ফলে কৃত্রিম জলাবদ্ধতার কারণে কয়েকশত বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের এখন দুর্বিষহ অবস্থা। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়ায় তলিয়ে গেছে রোপা-আমন ধানের চারা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ও সাধুহাটি ইউনিয়নের মাগুরা পাড়া ও নাথকুন্ডু ভেদূড়ীর বিলের মাঝখানে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরী করায় সাধারণ কৃষকের প্রায় শতাধিক ব্যক্তির দুইশত বিঘা জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ও সাধুহাটি ইউনিয়নের,মাগুরা পাড়া, মাছ মারা খাল এবং নাথকুন্ডু মাঠের পানি প্রবাহের পথে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ভেদুড়ী বিলের মাঝখানে বাঁধ তৈরী করে মাছ চাষ করছে । তাই ভেদুড়ী বিলে পানি প্রবাহের রাস্তা বন্ধ হওয়ায় বাঁধের উজানে প্রায় ২’শ বিঘা জমি তলিয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ঐ সমস্ত জমি মালিকরা যারা রোপা-আমনের চারা লাগিয়েছে এবং লাগাতে পারেনি জলাবদ্ধতার কারণে তারা বিপাকে পড়ে আছে ।

ভূমি মালিক শরিফুল, নোজো মিয়া,জিয়ার উদ্দীনসহ আরও অনেক চাষি জানান,এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যেখানে সেখানে পুকুর খনন করার কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় শত শত ধানের জমি পানির নিচে তলিয়ে আছে। খাল খনন করার ব্যপারে তারা বলেন-স্থানীয় চেয়ারম্যান নির্বাচনের পূর্বেই বলেছিলেন তিনি নিবার্চনে জয়লাভ করতে পারলে এই খালটি খনন করে দিবেন। কিন্তু আজও পর্যন্ত এই খাল খনন করার সুরাহা করতে পারেন নি তিনি। চাষীরা আরও বলেন, ধানের আবাদ না হলে না খেয়ে মরতে হবে আমাদের ।

এবিষয়ে মাছচাষী শহিদ মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, পানি নিস্কাশনের জন্য পুকুরের সাথে খাল রেখেছি এই খালটি পরিষ্কার করা হলে জলাবদ্ধতা থেকে চাষীরা বাঁচবে। তিনি আরও বলেন,আমি, অরুণ মেম্বার, আকবর মেম্বারসহ আমরা তিন জন ৫০ হাজার করে টাকা দিয়েছি। তাতে মোট দেড় লক্ষাধিক টাকার কাজ করেছি। সেই টাকা আমরা এখনো সরকার থেকে পায়নি। সুতরাং আমাদেরও দাবি এই খালটি যেন কতৃপক্ষ খুব দ্রুত মেরামত করে দেন তা হলে হাজারও চাষির মুখে হাশি ফুটবে।

এবিষয়ে উপসহকারী কৃষি অফিসার রোজিনা বলেন,আমি সেখানে গিয়েছি এবং দেখেছি কৃষকের ধানের চারা পানির নিচে নিমজ্জিত সুতরাং তাদেরকে আমরা সরকারি প্রণোদনা
দিবো। খাল খনন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমাদের ডিপার্টমেন্টের কাজ নয় এটা হলো এলজি ইডি প্রকল্পের কাজ। সুতরাং আমরা উপজেলা কৃষি অফিসারের মাধ্যমে একটি আবেদন দিবো যেন খালটি কতৃপক্ষ খনন করে দেন।

এবিষয়ে সাধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন বলেন- এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা আর এই বর্ষা মৌসুম আসলেই এ সমস্যাটা বেশি দেখা দেয়। তিনি আরও বলেন – বিশেষ করে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করার কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হওয়ায় এ সমস্যাটা হচ্ছে ।
এবং কৃষকের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য এই খালটির বিষয়ে সাধুহাটি, মধুহাটি ও সাগান্না ইউনিয়নের তিন চেয়ারম্যান মিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা বলেছি হয়তোবা দ্রুত এর সমাধান হবে।

এবিষয়ে সাগান্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মোজাম্মেল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোন কথা বলতে চান নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *