প্রধান শিক্ষকের দৌরাত্ম্যে শিক্ষক-কর্মচারীরা অতিষ্ঠ
তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী গোগ্রাম ইউনিয়নের (ইউপি) হুজরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় আকুন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত বলে অভিযোগ উঠেছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রীর কাছে বিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারি জিম্মি, শিক্ষার্থীরাও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। তারা কারণে অকারণে উচ্চবাচ্চ্য করে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট, শিক্ষকদের মাঝে দলাদলি সৃষ্টি করছে। স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষক, কম্পিউটার শিক্ষক ও লাইব্রেরিয়ানের বেতন বন্ধের দাবী করেছেন অভিভাবক মহল। গত ২১ আগষ্ট সোমবার প্রায় অর্ধশতাধিক অভিভাবকের স্বাক্ষর সংবলিত লিখিত অভিযোগ ডাকযোগে স্থানীয় সাংসদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও চেয়ারম্যান রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড বরাবর প্রেরণ করেছেন। বিজ্ঞানাগার,কম্পিউটার ও লাইব্রেরি না থাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। স্থানীয়রা জানান, বিজ্ঞান শিক্ষক আবু তালেব নিয়মিত কখানো ক্লাশ নেন না, এছাড়াও বিজ্ঞানাগার নাই। কম্পিউটার শিক্ষক হাবিবুর রহমান কম্পিউটার চালাতে পারে না, বিদ্যালয়ে কোনো কম্পিউটার নাই। লাইব্রেরিয়ান সহীদুল ইসলাম আছে, তবে লাইব্রেরি নাই। ফলে এরা বসে বসে সরকারি অর্থ তছরুপ করেছে। এদের এমপিও স্থগিত সময়ের দাবিতে পরিনত হয়েছে বলে মনে করেন পরিচালনা কমিটি।একাধিক অভিভাবক বলেন, দুর্নীতিবাজ
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা তাদের সন্তানদের এখানে আর লেখাপড়া করাবেন না।
জানা গেছে,বিগত ১৯৯৩ সালে গোগ্রাম ইউনিয়নের (ইউপি) হুজরাপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যায় স্থাপন করা হয়। বিগত ২০০১ সালে নিম্নমাধ্যমিক ও ২০০২ সালে মাধ্যমিক স্তরের এমপিওভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ে ১২ শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারি রয়েছে। কিন্ত্ত প্রধান শিক্ষক মাসদার আলীর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে বিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন হয়নি। অনিয়ম-দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ায় প্রধান শিক্ষক মাসদারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে মোজাহার আলীকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করা হয়েছে।কিন্ত্ত বিদ্যালয়ের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। তবে তারা স্বামী-স্ত্রী স্কুলের অর্থ নয়ছয় করে মোটাতাজা হচ্ছে বলে গুঞ্জন বইছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধানের সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির মাত্রা আরো বেড়েছে। তারা স্বামী-স্ত্রী বিদ্যালয়কে নিজেদের সম্পদ মনে করছে। এমনকি সকল নিয়মনীতি মেনে তিনটি পদে কর্মচারী নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্ত্ত তাদের পচ্ছন্দের প্রার্থীর নিয়োগ হয়নি। ফলে যারা নিয়োগ পেয়েছে তারা মাথাপিছু চার লাখ টাকা করে উৎকোচ না দেয়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তাদের যোগদান করতে দিচ্ছে না। যা নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। সরেজমিন তদন্ত করলেই এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাবে। এছাড়াও স্কুুুলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস নেয়া হয় না।এঘটনায় এলাকার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে।এটা একটা মাধ্যমিক স্কুল ভাবেতই অবাক লাগে। এবিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোজাহার আলী বলেন,যারা টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছে তারা পারলে যোগদান করাবে। তিনি তাদের যোগদান করাতে পারবেন না। তিনি বলেন, বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার ও লাইব্রেরী নাই এটা শিক্ষা বিভাগ দেখবে, এসব নিয়ে যারা সংবাদ প্রকাশ করবে, তাদেরও খবর করা হবে। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, বৈধভাবে নিয়োগ হয়েছে।কিন্ত্ত প্রধান শিক্ষক তাদের কাছে মাথা পিছু চার লাখ টাকা করে উৎকোচ না পেয়ে তাদের যোগদান করতে দিচ্ছে না। এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দুলাল আলম বলেন, নিয়োগ হবার পর যোগদানে বাধা দেবার কোনো সুযোগ নাই। তিনি বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।