বিদ্যুৎ করিডোর দিচ্ছে ভারত
ঢাকা: বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ করিডোর দিতে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে ভারত। এর ফলে নেপাল ও ভুটান থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আমদানি সহজ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় বিদ্যুৎ খাতে সহযোগিতা সংক্রান্ত বাংলাদেশ-ভারত যৌথ স্টিয়ারিং কমিটির ৯ম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ভারতের উপর দিয়ে নেপাল ও ভুটানের জলবিদ্যুৎ বাংলাদেশে আনার বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে ভারতের বিদ্যুৎ সচিব শ্রী পি কে সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নেপাল ও ভুটানের বিদ্যুৎ আমদানিতে বাংলাদেশকে কীভাবে সহায়তা করা যায় তা নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। এ বিষয়ে আজকের বৈটকে আলোচনা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই নেপাল ও ভুটানের বিপুল জলবিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে নিজের জন্য কাজে লাগাতে চাইছে। কিন্তু ভারতের নিমরাজির কারণে বিষয়টি খুব বেশিদূর এগোয়নি।
ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর ইন্ডিয়া নেপালে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে। বছর দুয়েক আগে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব দেয় তারা। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এ বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তাদের বিদ্যুৎ সচিব শ্রী পি কে সিনহা।
সভায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যুৎ খাত সংক্রান্ত চলমান প্রকল্পগুলো অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। ভারতের বহরমপুর (ভারত)-ভেড়ামারা (বাংলাদেশ) গ্রিড ইন্টার-কানেকশনের ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভারত থেকে আরো ৫০০ মেগাওয়াট ও বিদ্যমান লাইনের মাধ্যমে আরো ৩০-৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি এবং, ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানা কেন্দ্র থেকে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি নিয়ে আলোচনা হয়।
যৌথ স্টিয়ারিং কমিটি আশা করছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মধ্যে পালাটানা থেকে ১০০ মেগাওয়াট এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে।
এছাড়া ভারতের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং বাংলাদেশের মধ্যে আন্তঃসংযোগ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাল্টি টার্মিনাল এইচভিডিসি বাই-পোল সঞ্চালন লাইন নির্মাণ সংক্রান্ত প্রস্তাবনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। ভারতকে বিদ্যুৎ করিডোর দিতে এ সঞ্চালন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।
সভায় রামপালে বাস্তবায়নাধীন ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। মৈত্রী সুপার থারমাল নামের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ প্রকল্প নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই বলে জানানো হয়। বলা হয়, এ প্রকল্পের কারণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না।
গত বছরের অক্টোবরে দিল্লিতে জয়েন্ট স্টিয়ারিং কমিটির ৮ম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।