ঝিনাইদহে চাঞ্চল্যকর শিশু মনিরা হত্যা মামলায়চার জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড
লালন মন্ডল,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ সদর উপজেলার অচিন্তনগর গ্রামের ৫ বছরের শিশু মনিরা হত্যা মামলায় চার জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। ২৩/০৭/২০২৩ইং রোববার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ নাজিমুদ্দৌলা এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন। দন্ডিতরা হলেন অচিন্তনগর গ্রামের আছালত মন্ডলের ছেলে জাফর মন্ডল (৪২) মৃত খয়বার বিশ্বাসের ছেলে শিপন (৪০), কুদ্দুস মুন্সীর ছেলে মিন্টু মুন্সী (৪০) ও মুজিবার মোল্লার স্ত্রী নুপুর (৪০)। এই মামলার প্রধান আসামী আবু জাফর গ্রেফতারের পর পুলিশকে জানিয়েছিল মনিরার পিতা রমজান আলীর সাথে তাদের বিরোধ ছিল। এ ঘটনার সুত্র ধরে মনিরাকে তারা অপহরণ করে। এরপর তারা মনিরার পিতার কাছে মুক্তিপণ দাবী করে। টাকা না পেয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। হত্যার পর শিশু মনিরার হাত পা কেটে এসিডে ঝলসানো হয়। কারা কারা এই খুনের সাথে জড়িত তাও পুলিশকে জানাই আবু জাফর। ঘটনার চার দিন পর ১১ জুলাই অচিন্তনগরের একটি পাট ক্ষেতে মনিরার গলিত লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সে সময় পুলিশ জিহাদ নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করে। জিহাদকে টাকার লোভ দেখিয়ে মনিরাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে অচিন্তনগর গ্রামের মজিবর রহমানের স্ত্রী নুপুর খাতুনের হাতে তুলে দেয়। নুপুর শিশু মনিরাকে অচিন্তনগর গ্রামের আশাফুল, মোশাররফ ও আসালত মন্ডলের ছেলে জাফরের হাতে তুলে দেয়। কথিত আছে এই মামলা চলাকালে বাদী রমজান আলী মোটা অংকের টাকায় আসামীদের সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি হয়। স্ত্রী বাধ্য হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় জিডি করেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবি ইশারত হোসেন খোকন জানান, শিশু মনিরাকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা শিশুটির বাবার কাছে মুক্তিপণ দাবী করলে ১১ জুলাই সদর থানায় অজ্ঞাতদের আসামী করে অপহরন মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরদিন তার বাড়ির পাশের পাট ক্ষেত থেকে শিশু মনিরার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ ১০ জন অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘবিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আদালত ওই মামলার অভিযুক্ত একই গ্রামে জাফর, শিপন, মিন্টু ও নুপুর বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। একই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারদন্ড প্রদান করেন। মামলার অন্য আসামীদের বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।