বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন ওসি’র বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহন ও যাত্রী হয়রানীর অভিযোগ : প্রতিবাদে আগামী রোবাবার থেকে অনির্দিস্টকালের পরিবহন ধর্মঘট
বেনাপোল প্রতিনিধি : বেনাপোল চেকপোষ্ট পুলিশ ইমিগ্রেশনের ওসি আসলাম খানের বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য ও ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানীর অভিযোগে বেনাপোল দুরপাল্লার পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন রোববার থেকে অনির্দিস্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে বেনাপোল প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এই ঘোষনা দেন। এর আগে বৃহস্পতিবার ক্ষুদ্ধ শ্রমিকরা বেনাপোল চেকপোষ্ট পরিবহন কাউন্টারে পরিবহন শ্রমিকদের এক জরুরী সভা শেষে ইমিগ্রেশন ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে দুর্নীতিবাজ ওসি আসলাম খানের অপসারনের দাবীতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়।
বেনাপোলের পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ জানান, ঢাকা-কোলকাতা বাসের পাসপোর্ট যাত্রীরা যাতে হয়রানী না হয় সেজন্য প্রতি মাসে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাকে প্রায় ৩ লাখ টাকা দেয়া হয়। তারপর ও যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত টাকা নেয়ার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছে। পাসপোর্টে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তারা এই টাকা আদায় করছেন। পাসপোর্টে প্রাইভেট সার্ভিস লেখা থাকলে নেয়া হচ্ছে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, রিন্যুয়াল জাল বলে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, নামের একটি অক্ষর ভুল হলে ১ হাজার থেকে ১৫’শ টাকা, সিঙ্গেল মহিলা ভারতে গেলে তার কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা, পাসপোর্টে অন্যদেশের ভিসা থাকলে নেয়া হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, জন্ম তারিখের সাথে আইডি কার্ডের মিল না পেলে নেয়া হচ্ছে ২ হাজার টাকা। আর এসব টাকা নেয়ার জন্য ইমিগ্রেশনে ওসির রয়েছে ৭ জন ব্যক্তিগত কর্মচারী । তারা হলো- আবুল কালাম, শরিফুল, রুস্তম, ঝন্টু, শাহীন, রতন ও বাবুল। ওসির ছত্রছায়ায় লালিত এই ৭ কর্মচারী ইমিগ্রেশনে এমন কোন অনিয়ম নেই যে তারা করেনা। ভ্রমন ট্যাক্স ফাকি থেকে শুরু করে ম্যান ছাড়া পাসপোর্টে সিল মারা সকল কাজ কর্তার নির্দেশে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তারা করে থাকে। এসব অনিয়মের বাধা দেয়ায় ইমিগ্রেশন ওসি ক্ষেপেছেন পরিবহন শ্রমিকদের উপর।
ইতিমধ্যে যাত্রীদের সহায়তাকারী পরিবহন শ্রমিকদের ইমিগ্রেশন থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং যাত্রীদের হাতে লাগানো স্টিকার ছিড়ে ফেলা হ্েচ্ছ। যাতে অতিরিক্ত ঘুষের টাকা আদায় ও যাত্রীদের হয়রানী করলে কোন বাধা না আসে। অতিরিক্ত টাকা আদায় ও যাত্রী হয়রানীর প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে বেনাপোল প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সাথে এক মত বিনিময় সভা করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মতবিনিময় সভায় তারা আরও বলেন, ওসি আসলাম খান যাত্রী হয়রানী বন্ধ না করলে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সোহাগ পরিবহনের ম্যানেজার সহিদুল ইসলাম, গ্রীন লাইনের সুব্রত ঘোষ, শ্যামলী পরিবহনের গিয়াস উদ্দিন. সাউদিয়া পরিবহনের হাজী নজরুল ইসলাম ও অন্যান্য শ্রমিকরা। এ সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এখন থেকে আর কোন ঘুষের টাকা তারা ওসি কে দেবে না। এ কথা শোনার পর ওসি আসলাম খান ক্ষেপেছেন পরিবহন ম্যানেজারদের উপর।
এ ব্যাপারে বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আসলাম খান জানান, বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশন কাষ্টমস থেকে পরিবহন শ্রমিকদের বের করে দেয়ায় তারা আমার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছেন। এখানে আমি বা আমার কোন লোক দ্বারা যাত্রীদের হয়রানী এবং যাত্রীদের কাছ থেকে কোন টাকা আদায় করা হয়না।