ঠাকুরগাঁওয়ে স্কুল মাঠে আলুর আড়ত, ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা
জসিম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নে
অবস্থিত ফারাবারি শাপলা স্কুল। এই স্কুলের মাঠ ভাড়া নিয়ে সম্প্রতি সেখানে
গড়ে উঠেছে অস্থায়ী একটি আলুর আড়ত। ফলে স্কুলের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট
হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের মাঠে ট্রাক আসা যাওয়া করায় যে কোনো সময় বড় ধরনের
দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজনসহ অভিভাবকরা।
বুধবার (৩০ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের প্রাচীর ঘেরা মাঠ।
মাঠের ভেতর টিনের ছাউনি দিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী আলুর আড়ত। ট্রাক্টরে
আলু লোড আনলোডের কাজ চলছে এই আড়তে। একটির পর একটি গাড়ি আলু আনা নেওয়ার
কাজ করছে স্কুল মাঠের ভেতর দিয়ে৷ টিফিন বিরতিতে এই মাঠেই খেলায় ব্যস্ত
থাকে শিক্ষার্থীরা।
কিছুদিন আগে মানিকগঞ্জের একটি স্কুলের মাঠে গাড়ি চাপায় এক ছাত্রী ও
শিক্ষিকা নিহতের ঘটনায় সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। এমন অবস্থায়
ঠাকুরগাঁওয়ের স্কুলটিতেও যখন তখন ট্রাক্টরের চাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা
ঘটার আশঙ্কা সবার।
বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শ্রী রায় বলে, ‘করোনার কারণে স্কুল
অনেকদিন বন্ধ ছিলো। এখন খুলেছে। কিন্তু স্কুলের মাঠে আড়ৎ থাকায় টিফিনের
সময়ে আমরা এখন খেলতে পারিনা। মাঠে সবসময় গাড়ি যাওয়া আসা করে। আমাদের খুব
ভয় লাগে।’
অপর শিক্ষার্থী দিবা বালা বলেন, ‘আমাদের স্কুল মাঠে আলুর এমন আড়ত করাতে
আমাদের খেলাধুলা বন্ধ হয়ে গেছে। আলু বোঝাই গাড়ি আসা যাওয়া করছে।
স্থানীয়রা ভ্যান গাড়িতে করে এখানে আলু দিয়ে যাচ্ছে৷ মাঠটা ব্যস্ত হয়ে
গেছে আলুর কাজে। আমরা খেলাধুলা করতে পারছিনা। এছাড়া স্কুলে আসা ও যাওয়ার
সময় আমাদের ভয় লাগে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘আমরা
সরকার থেকে টেবিল চেয়ার পাইনা। তাই স্কুলের এসব উন্নয়নের জন্য মাঠটা ভাড়া
দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। তবে এর কোনো হিসাব আমরা কখনোই
পাইনি।’
এ বিষয়ে জানতে আড়ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে কেউ
কথা বলতে রাজি হয়নি।
আকচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সুব্রত কুমার বলেন, ‘আমি কয়েকবার বাধা দিয়েছি।
তবে বিদ্যালয় কতৃপক্ষ আমার কথা শোনেনি।’
শাপলা স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিকা রায় বলেন, ‘স্কুলের
উন্নয়নের জন্য মাঠ ভাড়া দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানানো
হয়েছে।’
আড়ত কর্তৃপক্ষ কতো টাকা ভাড়া দিচ্ছে এবং তিনি কাকে মাঠটি ভাড়া দিয়েছেন এ
বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিকা
রায়।
এদিকে স্কুল মাঠ আড়ত গড়ে ওঠার বিষয়টি জানেন না বলে জানিয়েছেন উপজেলা
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে অবশ্যই
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’