দখল হয়ে যাচ্ছে লামা বাজারের একমাত্র পুকুরটি
মোঃ মোরশেদ আলম চৌধুরী লামা বান্দরবান : লামা বাজারের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত একমাত্র পুকুরটি দখল ও দূষণের কবলে পড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে। পুকুরের চারপাশে গড়ে উঠা দোকানপাট ও বসতবাড়ির লোকজনের ফেলা আবর্জনার কারণে পুকুরটি ময়লার ভাগাড় হিসাবে রুপ নিয়েছে। এতে করে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে পুকুরটি। একসময় বাজার ও চারপাশের মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় সকল কাজে পুকুরটির পানি ব্যবহৃত হত। প্রতিবছরই লামা বাজারের আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তখন পুকুরটির পানি স্বর্গীয় আর্শীবাদ হিসাবে কাজে লাগে সকলের। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের ‘বাজার ফান্ডের’ আওতাধীন লামা বাজারের এই পুকুরটি পুনঃসংসস্কার করে ব্যবহারের উপযোগী করা সময়ের দাবী হিসাবে দেখছেন স্থানীয়রা।
এছাড়া পুকুরটি নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এখন কচুরিপানা ও আবর্জনায় পরিপূর্ণ। ফলে এলাকায় মুষ্টিমেয় প্রভাবশালী কিছু লোক সুকৌশলে দিন দিন আরো ময়লা-আবর্জনা ফেলে সরকারি ওই জলাশয়টি দখল করার পায়তারা করছে। কচুরিপানা ও আবর্জনায় পরিপূর্ণ ওই জলাশয়কে অনেকেই মশার আদর্শ প্রজননস্থল বলে মনে করছেন। সৃষ্টির পর থেকে দুই-একবার সংস্কার হলেও দীর্ঘদিন যাবৎ পুকুরটি সংস্কার করা হয়নি। এতে মশার জ্বালায় অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তাছাড়া প্রতিবছর পাহাড়ি ঢলে ডুবে যাওয়ায় পলিমাটি ও কাঁদায় প্রায় ভরাট হয়ে গেছে পুকুরটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, লামা মাছ বাজারের সামনে চতুর্ভুজ আকৃতির পুকুরটি প্রায় ৪৫ শতক জায়গা জুড়ে রয়েছে। পুকুরের পানি ব্যবহারের জন্য দুইপাশে ২টি সিঁড়ি করা হয়েছে। পুকুরটিতে বারমাসই পানি থাকে। পুকুরের এক পাশে দোকানপাট আর বাকী তিন পাশে মানুষের বসতবাড়ি। ধীরে ধীরে দখল ও দূষণের কারণে পুকুরের পানি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। চারপাশের বসবাসকারীরা তাদের সকল ময়লা আবর্জনা সহ টয়লেটের মলমূত্রের লাইন দিয়েছে পুকুরটিতে। অর্ধশত বছরের পুরাতন বাজারের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় পুকুরটি এখন কয়েক কোটি টাকা সম্পদে রুপ নিয়েছে। তাই কৌশলে কিছু অসাধু মানুষ ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে দখল নিতে মরিয়া হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা জানান, জনস্বার্থে এবং পর্যটকের ব্যবহারের সুবিধার্থে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ পুকুরে একটি ঘাটলা নির্মাণ করে দেয়।
লামা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, লামা বাজারে বারমাসই পানির সংকট। এটি লামা বাজারের একমাত্র পুকুর। দ্রুত পুকুরটি সংস্কার করে মানুষের ব্যবহার উপযোগী করার দাবী জানাচ্ছি আমরা।
আরো অনেকে বলেন, বাজারের আগুন লাগলে পুকুরের পানি একমাত্র ভরসা। অযত্নে অবহেলায় ও ময়লা ফেলার কারণে পুকুরটি ভরাট হয়ে গেছে। আগে প্রতিবছর মাছ চাষের জন্য ইজারা দিত বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ। পুনখনন ও সংস্কার করে পুকুরটি জনসাধারণের ব্যবহারের উপযোগী করার অনুরোধ করছি।
লামা বাজার চৌধুরী থোয়াইনু অং চৌধুরী বলেন, লামা বাজার প্রতিষ্ঠা কালে শতক প্রতি দেড় হাজার টাকা প্রদান করে পুকুরের জায়গাটি অধিগ্রহণ করে বান্দরবান জেলা পরিষদ। প্রায় ৪০ থেকে ৪৫ শতক জায়গার উপর পুকুরটি অবস্থিত।