ভেঙে নেয়া ঘর ফিরে পেয়ে স্বস্তিতে মা-মেয়ে

Madaripur-Kalkinimmmকালকিনি (মাদারীপুর): স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে নিয়ে ছোট যে ঘরটিতে মা থাকতেন সেটি ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) আশা ভেঙে নিয়েছিল। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পরই তোলপাড় শুরু হয় প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষের মাঝে। টনক নড়ে এনজিও আশা কর্তৃপক্ষেরও। অবশেষে ভেঙে নেয়ার এক দিনের মাথায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দরিদ্র পরিবারটির ওই ঘর পুনঃনির্মাণ করে দিতে বাধ্য হয় আশা। মাথা গোজার ছোট ঘরটি ভেঙে নেয়ায় মা-মেয়ে অসহায় হয়ে পড়লেও ঘরটি ফিরে পেয়ে তারা এখন স্বস্তিতে আছেন। নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে স্কুলছাত্রী লিমা।

সোমবারা কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগরের কাচারিকান্দি গ্রামের আলি খার স্ত্রী নাছিমা বেগমের বসতভিটায় গিয়ে দেখা যায় তারা আবার নতুন করে পরিবারের সবকিছু গোছিয়ে নিচ্ছেন। স্কুলছাত্রী লিমা তার পড়ালেখার পাশাপাশি মাকে সহযোগিতা করছে ঘুরে দাঁড়াতে। দুঃসময়ে এতো মানুষের সহযোগিতা আর সাহস দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ানোয় এখন তারা অগের চেয়ে অনেকটাই ভালো ভাবে চলতে পারবেন বলে আশা করছেন।

এদিকে পরিবারটিকে মাদারীপুর ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নগদ ১৭ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেন ইতালি প্রবাসী জনি মিয়া নামের এক সমাজসেবক। অন্যদিকে ভুক্তভোগী নাছিমার মেয়ে দশম শ্রেণীর ছাত্রী লিমার স্নাতকোত্তর পর্যন্ত লেখাপড়ার সব খরচ বহন করার ঘোষণা দিয়েছে এক্সিমব্যাংক।

শুধু তাই নয়, এনজিও আশার ঋণের ১৫ হাজার টাকা পরিশোধের ঘোষণা দিয়েছেন কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপাসিন্দু বালা। এছাড়া লন্ডন প্রবাসী আব্দুল হাসিম অসহায় পরিবারটিকে ৫টি ছাগল দান করবেন বলে জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পারায় ২ মে শনিবার দুপুরে মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার এনায়েতনগর এলাকার কাচারিকান্দি গ্রামের নাসিমা বেগমের বসতবাড়ি ভেঙে নিয়ে যায় এনজিও আশার মাঠকর্মীরা। এতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে অসহায় মা-মেয়ে।

এর আগে গেল ২ ফেব্রুয়ারি আশার কালকিনি উপজেলার সমিতিরহাট ব্রাঞ্চ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঋণ নেন নাসিমা বেগম। চার কিস্তি দেয়ার পর সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। মেয়ের লেখাপড়াসহ অন্য খরচের চাপে কিস্তি দেয়া সম্ভব হচ্ছিল না। এরপরেও কিস্তি পরিশোধের জন্য অনবরত চাপ প্রয়োগ করতে থাকে এনজিওর মাঠকর্মীসহ কর্মকর্তারা। এতে দিশেহারা হয়ে পড়ে পরিবারটি। অবশেষে ওই টাকা পরিশোধ বাবদ ২ মে শনিবার মাথাগোজার একমাত্র ঘরটি আশার কর্মীরা ভেঙে নিয়ে যায়।

এনিয়ে খবর প্রকাশ হলে প্রশাসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর প্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান তৌফিকুজ্জামান শাহীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. হেমায়েত উদ্দিন ও ওসি কৃপাসিন্দু বালার উদ্যোগে আশ্রয়হীন পরিবারটির বসতঘর গতকাল রোববার পুনরায় নির্মাণ করে দিতে বাধ্য হয় বেসরকারি সংস্থা আশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *