মতলব ইয়াবার ছড়াছড়ি যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে
মতলব (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: মতলব উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে মাদক (ইয়াবা)। উপজেলা সদরসহ গ্রামগঞ্জের হাটবাজার ও আনাচে-কানাচে এখন দেদার বেচাকেনা হচ্ছে ধ্বংসাত্মক মাদকটি (ইয়াবা)। উঠতি বয়সী যুবক থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী যুবকরাই বেশি এ ধ্বংসাত্মক মাদক (ইয়াবা) সেবনে আসক্ত হচ্ছে। এতে করে যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মতলব পৌরসভার মতলব বাজারের আশপাশের এলাকা, মুন্সিরহাট বাজার এলাকা, বরদিয়া বাজার, টিএন্ডটি বোয়ালিয়া সড়ক এলাকা, পৈলপাড়া, আশ্রম, দিঘলদী, উপাদী উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিঙ্গাভাঙ্গা, নারায়ণপুর বাজার এলাকা, জোড়পুল, কাশিমপুর, নায়েরগাঁও বাজার, পিতাম্বদী বাজারসহ প্রত্যেক ইউনিয়নেই কম বেশি ইয়াবা বেচাকেনা হচ্ছে। তবে উল্লেখিত স্থানগুলো ছাড়াও গ্রামের আনাচে-কানাচে ভাসমান অবস্থায় এ মাদক ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠেছে। মাদকটি (ইয়াবা) পরিমাণে অতি ছোট হওয়ায় পুলিশ প্রশাসন ও সচেতন ব্যক্তিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে সমাজের কতিপয় দুষ্কৃতকারী যুবক এ ব্যবসায় মেতে উঠেছে। বিশেষ করে বেকার যুবকরাই এ নেশায় বেশি আসক্ত হচ্ছে। কুমিল্লা ও চাঁদপুরের এক সময়ের কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত মতলবের বিমল ঘোষ মারা যাওয়ার পর অনেকেই ধারণা করেছিলো মতলবের মাদকের ব্যবসা হয়ত শেষ হবে এবং সমাজ এ ব্যাধি থেকে রেহাই পাবে। কিন্তু বর্তমানে মতলবে বিমল ঘোষের অনুপস্থিতিতে বহু বিমল ঘোষের জন্ম হয়েছে। এদের নাম পরিচয় অনেকেই জানলেও কেউ বলতে সাহস পাচ্ছে না। আর এ সকল মাদক ব্যবসার অন্তরালে কোনো না কোনো রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর শেল্টার রয়েছে বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। ইতিপূর্বে মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদক সামগ্রী উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করলেও অনেকেই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় ওই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতলবের বেশ কজন ব্যক্তি জানান, যুবসমাজকে এ ধ্বংসাত্মক ব্যাধি থেকে রক্ষা করতে হলে প্রত্যেক এলাকার যে যার অবস্থান থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তথ্য ও বিভিন্নভাবে সহায়তা করতে হবে। সন্ধ্যার পর থেকে মতলব বাজারের আশ-পাশের এলাকাগুলোতে পুলিশ প্রশাসন নজরদারী করলে মাদকের হাত থেকে স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা রক্ষা পাবে বলেও বেশ কজন পৌর নাগরিক জানান। মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন জানান, আমি এ থানায় আসার পর নারায়ণপুর, নায়েরগাঁও ও মুন্সীরহাটসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মদ, গাঁজা ও ইয়াবাসহ মাদক সামগ্রী উদ্ধার ও বেশ কজনকে আটক করে মাদকের মামলায় আদালতে প্রেরণ করেছি। এখনও আমাদের মাদক বিরোধী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদকের সাথে পুলিশের কোনো আপোষ নেই। তাই এ ধরনের যে কোনো তথ্য আমাদেরকে জানানোর সাথে সাথে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। মতলব দক্ষিণকে মাদকমুক্ত করার জেহাদ ঘোষণাও করেন তিনি।