এবার সুন্দরবনে রাস মেলা নয়, হবে পুণ্যস্নান

অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: খুলনার দুবলার চরে সুন্দরবনে এবার রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে রাস মেলা হচ্ছে না, হবে পুণ্যস্নান। এতে শুধু তীর্থযাত্রী ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। করোনা সংক্রমণ এড়াতে এবার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য প্রতিবছর আয়োজিত রাস মেলায় সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের অংশ নেওয়ার সুযোগ ছিল। ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী ‘রাস পূর্ণিমা পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে। পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি রুট নির্ধারণ করেছে। অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন টোকেন ও টিকিট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলারকে মেলা প্রাঙ্গণে কন্ট্রোল রুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, এবার রাস মেলা হচ্ছে না, হবে রাস পূজা ও পুণ্যস্নান। এতে শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ ও তীর্থযাত্রীদের অনুমতি দেওয়া হবে। দিতে হবে প্রবেশ ফি। তীর্থযাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বন বিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ সূত্র জানায়, পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে তিন দিনের জন্য এবার শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোনো তীর্থযাত্রীকে পুণ্যস্নানস্থলে যেতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠানস্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষাসামগ্রী হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াশ রাখা হবে। পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ প্রাপ্ত সনদপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, শব্দযন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যেকোনো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র, হরিণ মারার ফাঁদ, কুড়াল, দড়ি বহন করা থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থীদের জানমালের নিরাপত্তায় বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড বাহিনীর টহল দল নিয়োজিত থাকবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *