আড়িয়া ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ডে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: আলোচিত সেই আড়িয়া ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ড দুর্নীতির বিষয়ে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ১৪ নম্বর আড়িয়া ইউনিয়নে দুস্থ পরিবারদের সহায়তায় ভিজিডি কার্ডের তালিকা তৈরিতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠে গত মে মাসে। অভিযোগে বলা হয়, দুস্থ-অসচ্ছল পরিবারের পরিবর্তে সচ্ছল পরিবার, এমনকি কয়েকজন ইউপি সদস্যের স্ত্রীদের নাম এক বা একাধিকবার ঐ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য ১৪ নম্বর আড়িয়া ইউনিয়নে ৯২টি দুস্থ পরিবারের জন্য ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। উক্ত বরাদ্দকৃত প্রত্যেক কার্ডধারী প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল/গম পাবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এদিকে ভিজিডি কার্ডের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুস্থ পরিবার, পরিবারের প্রধান নারী, ভূমিহীন, বসতবাড়ির অবস্থা খারাপ, দিনমজুরি করে কোনোরকমে সংসার চালায় এমন পরিবারকে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি কমিটি যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার দপ্তরে জমা দেবার পর তালিকা চূড়ান্ত হলে ভিজিডি কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য প্রদান করা হয়।
এরই মধ্যে অত্র ইউনিয়নে চূড়ান্ত তালিকার ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে খাদ্যশস্য বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অত্র ইউনিয়নের নতুন ৯২ জন ভিজিডি কার্ডধারীর মধ্যে ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাশিদুল ইসলাম তার নিজ ওয়ার্ডে এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তার স্ত্রী পারভীন ইয়াছমিনের নাম অন্তর্ভুক্ত করাসহ ভাতিজি, ভাইয়ের স্ত্রী, আপন মামীর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন। একই ওয়ার্ডের ৩ নম্বর ক্রমিকের হাজেরা খাতুনের নাম তালিকাভুক্ত থাকলেও আজ পর্যন্ত তিনি চাল পাননি বলে অভিযোগ করেন। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য খোশরুল ইসলাম ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী ছাবিনা খাতুনের নাম ২২ নম্বর ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুল আলীমও ভিজিডি কার্ডের তালিকায় তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনের নাম ক্রমিক নম্বর ৭০ এ অন্তর্ভুক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাঈদ আনসারী বিপ্লব সে সময় সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি মিথ্যা বলে দাবি করেন। কিন্তু, মাঠ পর্যায়ের তথ্য-প্রমাণে তার দাবি শুরুতেই হালকা হয়ে যায়।
পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের স্ত্রীদের নামে কার্ড হওয়া ঠিক না। এক জন ওয়ার্ড সদস্যের স্ত্রীর নাম একাধিকবার থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটা কম্পিউটারে মিসটেক হয়েছে যা আমার জানা ছিল না।’
এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ইশরাত্ জাহান বলেন, উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
গত রোববার থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ওই ইউনিয়নে এই তালিকায় আরও ৪-৫ জনের নাম পরিচয় থাকলেও তারা নিজেরাই অবগত নয় এই কার্ড সুবিধার বিষয়ে। নিজের নামে কার্ড ইস্যু করা থাকলেও সুবিধা পায় না এমনকি কার্ডের বিষয়ে জানেনই না, শ্রী শেফালী দাস, রানী খাতুন,রোজিনা খাতুন তাসলিমা খাতুন, হামিদা খাতুন,হাজেরা খাতুন,বেনুয়ারা খাতুন।
এ ঘটনায় জেলার স্থানীয় ও জাতীয় গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে খবর প্রকাশ হয়।