করোনা ভাইরাস: সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানতে হবে যে ১৩ নির্দেশনা
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: করোনা ভাইরাসের ধাক্কায় নাকাল দেশ। মানুষের স্বাভাবিক জীবনের অনিশ্চয়তা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। বিশেষত মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির জীবন-জীবিকা চরমভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। মাসের পর মাস কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে থেকে অনেকেরই সংসারে টানাপোড়েন চলছে। সরকারের দেয়া বরাদ্দের ত্রাণসামগ্রী ঠিকঠাকভাবে পৌঁছুচ্ছে না ঘরবন্দি সাধারণ মানুষের দোড়গোড়ায়। অন্যদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব দিন দিনই ব্যাপক হারে বাড়ছে। বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর সংক্রমণ ঝুঁকিও।
এমতাবস্থায় করোনার প্রাদুর্ভাব ও ব্যাপক বিস্তার ঠেকাতে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দফতর এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের স্বাস্থ্যবিধি পালন নিশ্চিত করতে ১৩টি জনগুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এই ১৩ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে-
১) প্রয়োজনীয় সংখ্যক জীবাণুমুক্তকরণ টানেল স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।
২) অফিস চালু করার পূর্বে অবশ্যই প্রতিটি অফিস কক্ষ, আঙিনা ও রাস্তাঘাট জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৩) প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রবেশপথে থার্মাল স্ক্যানার বা থার্মোমিটার দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে অফিসে প্রবেশ করাতে হবে।
৪) অফিস পরিবহনগুলো অবশ্যই শতভাগ জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। যানবাহনে বসার সময় পারস্পরিক ন্যূনতম তিন ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং সবাইকে মাস্ক (সার্জিক্যাল মাস্ক অথবা তিন স্তর বিশিষ্ট কাপড়ের মাস্ক, যা নাক ও মুখ ভালোভাবে ঢেকে রাখবে) ব্যবহার করতে হবে।
৫) সার্জিক্যাল মাস্ক শুধু একবার ব্যবহার করা যাবে। কাপরের মাস্ক সাবান দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে পুনরায় ব্যবহার করা যাবে।
৬) যাত্রার পূর্বে কিংবা যাত্রাকালীন পথে বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
৭) খাওয়ার সময় শারীরিক দূরত্ব (ন্যূনতম তিন ফুট) বজায় রাখতে হবে।
৮) প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর হাত সাবান দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ নিশ্চিত করতে হবে।
৯) অফিসে কাজ করার সময় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
১০) কর্মস্থলে সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং ঘন ঘন সাবান পানি ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
১১) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা প্রতিরোধে বিভিন্ন সাধারণ নির্দেশনাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি নিয়মিত মনে করিয়ে দিতে হবে এবং তারা স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলছে কিনা তা মনিটরিং করতে হবে। ভিজিলেন্স টিমের মাধ্যমে মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১২) দৃশ্যমান একাধিক স্থানে ছবিসহ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নির্দেশনা ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
১৩) কোনও কর্মচারীকে অসুস্থ পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টাইনে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর সংবাদ আসে ১৮ মার্চ। এরপর মার্চ মাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু নাগালের মধ্যে থাকলেও এপ্রিলের শুরু থেকেই বিশেষত এপ্রিলের মাঝামাঝির পর থেকে ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে এখন পর্যন্ত মোট ১৬ হাজার ৬৬০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ২৫০ জন, সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ১৪৭ জন।