তানোরে ব্যাংক কর্মকর্তার দৌরাত্ন্য!
তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে ব্যাংক কর্মকর্তার (ম্যানেজার) দৌরাত্ন্যে গ্রাহকগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে সরকারের কোনো নির্দেশনাও মানছেনা তানোর উপজেলার সোনালী ব্যাংক মুণ্ডুমালা হাট শাখা। এখানে কৃষি, ক্ষুদ্র, খামার ও ব্যবসায়ী ঋণের টাকা জোর করে এমনকি মামলা ও পুলিশে ধরিয়ে দেবার ভয় দেখিয়ে গ্রাহকের কাছে থেকে আদায় করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।এছাড়াও এ শাখায় প্রায় ৪০০ বেশি শিক্ষক, কর্মচারীদের ঋণের কিস্তি টাকা মার্চ মাসে বেতন আসার পরে নিজ নিজ অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করছে ভুক্তভোগীরা। অথচ করোনা প্রভাবে নাজেহাল পুরো দেশ। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ মানুষ। আয় রোজগার না থাকায় সরকারে সাহেয্যের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা পেয়ে বেসরকারী এনজিও তাদের কিস্তি আদায় বন্ধ রেখে বেশ মানবতায় পরিচয় দিয়েছে। কিন্ত সরকারী মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকটি তাদের গ্রাহকের কাছে থেকে কিস্তির টাকা এক প্রকার জোর করে আদায় করছেন। এতে ঋণ গ্রহীতারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল মঙ্গলবার বয়স্ক ভাতার টাকা উত্তেলনের জন্য ব্যাংকে আসেন মুণ্ডুমালা পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের নাম প্রকাশ না করার শর্তে (জনেক ব্যাক্তি) যার হিসাব নং (১১১০২) বই নম্বর ৬৮৫৪। ৬ মাসের সরকারী ভাতার দরুণ ৩ হাজার টাকা উঠাতে আসেন তিনি।কিন্তু ব্যাংক ম্যানেজার তার ভাতার পুরো টাকা থেকে কিস্তি কেটে নেয়ার টালবাহানা শুরু করেন। পরে সে ব্যাক্তি অনুরোধে দেড় হাজার টাকা কিস্তি কেটে বাকি টাকা ফেরত দেন। বয়স্ক ভাতা উত্তোলন করতে আসা এক ব্যাক্তি জানান, সোনালী ব্যাংকে গত কয়েক বছর আগে ২০ হাজার টাকা ক্ষুদ্রঋণ নেন তিনি। প্রত্যেক মাসে তিনি কিছু না কিছু টাকা জমা দেন ব্যাংকে। চলতি মাসেও তিনি ১ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। তিনি আরো জানান,করোনার জন্য আয় রোজগার কমে গিয়েছে। এমন সময় সরকারে দেয়া এক সাথে ছয় মাসের বয়স্ক ভাতার প্রায় ৩ হাজার টাকা পাওয়া যাবে এমন খবরে খুশি ছিলাম। নিজের ওষুধ ও রোজার মধ্যে খরচ করবো ভেবে ছিলাম। কিন্ত ব্যাংক ম্যানেজার তাদের হাতে টাকা পেয়ে কেটে নিলো। পাঁচন্দর দাখিল মাদরাসার অফিস সহকারী হারুন অর রশিদ বলেন, তার মার্চ মাসের বেতন ব্যাংকে জমা হওয়ার সাথে সাথে ভোগ্যপণ্য ঋণের কিস্তি কেটে নেয়া হয়েছে। ব্যাংকে এ মাসে কিস্তি না কাটার জন্য অনুরোধ করা হলেও তারা কোন অনুরোধ রাখেনি। মার্চ মাসে কিস্তির টাকা কেটে নিয়েছে এমন একাধিক শিক্ষক জানান, করোনার কারণে সরকার ঘোষণা করেছেন এ মুহুর্তে সকল ব্যাংক সুদ, কিস্তি বন্ধ থাকবে। সরকারে ঘোষনাই কিস্তি বন্ধ রেখেছেন বে-সরকারী এনজিওগুলো ঠিকই। কিন্ত সরকারী মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংক তাদের সাথে আচরণ করছেন অন্য রকম। গত মার্চ মাসের বেতন আসা মাত্র প্রায় ৪০০ বেশি শিক্ষক, কর্মচারীর ভোগ্যপণ্য ঋণের কিস্তি জোরপূর্বক অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেন। এতে শিক্ষক, কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে তানোর উপজেলার সোনালী ব্যাংক মুন্ডুমালা হাট শাখার ম্যানেজার মিঠুন কুমার দেব বলেন, নিয়ম মেনেই কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। করোনার কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কথা সরণ করে দিলে ম্যানেজার বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভাষন দিয়েছেন দিতে পারেন এটা তার বিষয়, তিনি তো ঘরে ঘরে চাকরি দেবার কথা বলেছিলেন সেটা কি হয়েছে, তার থেকে বড় কথা আমরা অফিসিয়াল কোন নির্দেশনা পাইনি বলে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে। বয়স্ক ভাতার টাকা কেটে নেয়ার বিষয়ে ম্যানেজার বলেন, যে ভাতায় হোকনা কেন কিস্তিতে কোন ছাড় নাই