করোনা ভাইরাসে ঘরমুখী শ্রমজীবি ৩০হাজার পরিবার দূশ্চিন্তায় খাদ্য সহায়তার দাবি!
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির.সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার,বাগেরহাট:বিশ্ব ব্যাপী প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার দিনমজুর শ্রমজীবি নি¤œ আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
ঘরমুখী হয়ে বসে থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় কাটতে হচ্ছে তদের। প্রায় ৩০ হাজার পরিবার এদের একমাত্র উর্পাজন শ্রমের মাধ্যমে দৈনিক আয়। কর্মহীন এ মানুষগুলো খাদ্য সহায়তার, নগদ অর্থ ও ওষুধপত্রের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।
এ শ্রেনী পেশায় যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে রিক্সা-ভ্যান চালক, মাটি কাটা-ধান কাটা শ্রমীক, সাইকেল-ভ্যান মেরামতকারি শ্রমীক, কাধেঁ করে খাবার পানি বাসায় বাসায় বহনকারি। এদের অধিকাংশ মানুষই রয়েছে ভূমিহীন। পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমীকেরও সংখ্যা রয়েছে অনেক। সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে নারী পুরুষ উভয় কাজ করছেন। ছেলে-মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে দু’মুটো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার তাগিতে প্রতিনিয়ত এ জীবনযুদ্ধ।সরেজমিনে ঘুরে জানাগেছে, উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের কাঁকড়াতলী গ্রামটির কোল ঘেষে রয়েছে একটি খাল। খালটি শুকিয়ে দু’পাড়েই ভরাট হয়ে পড়েছে বিস্তার চর। এ চরে বসবাস করছেন ভূমিহীন অনেক পরিবার।
কথা হয় ফজিলা বেগম(৩২)স্বামী দিনমজুর শাহাজাহান শাহ, পূর্ব পুরুষ থেকে তারা ভূমিহীন, সরকারি জমিতে বসবাস করছেন। তাদের পরিবারের রয়েছে ২ ছেলে ১ মেয়ে সহ দু’ই পুত্রবধু। কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে সংসার চলছেনা তাদের আর। হিরা বেগম (৩১),স্বামী জাহিদ হাওলাদার ফেনীতে রিক্সা চালিয়ে উপার্জন করে দিনকাটছে তাদের, সংসারে রয়েছে ১ ছেলে, কর্মহীন হয়ে পড়ে দুশ্চিন্তায় ছাপ চোঁখে মুখে তাদের।
অনুরুপ রশিদ খান, মুক্তা বেগম, হায়দার ফকিরসহ একাধিক ভূমিহীনদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কাজ করতে যেতে পারছিনা করোনা ভাইরাসের কারনে, কিভাবে সংসার চলবে। তার মধ্যেও অসুস্থ্য হয়ে পড়লে কিভাবে চলবো জানিনা। এ রকম অসংখ্য কথা তুলেছেন সংবাদকর্মীদের পেয়ে তারা।এদিকে জিউধরার ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বাদশা জানান, শ্রমজীবি ভূমিহীন পরিবারগুলো রয়েছে বেশিরভাগ পাজাখোলা, বাইনতলা, সোনাতলা, বটতলা, খনির খন্ড ও ডুমুরিয়া গ্রাম, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাচ্চু জানান, পশ্চিম আমুরবুনিয়া, পিসি বারইখালী গ্রামে ভূমিহীন ও শ্রমীক শ্রেনীর মানুষের বসবাস বেশী, তারপরেও অন্য গ্রামগুলোতে কমবেশী রয়েছে বিশেষ করে সুন্দরবন ঘেষা আমুরবুনিয়া গ্রামের মানুষ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল, তেলীগাতি ইউপি চেয়ারম্যান মোর্শেদা আক্তার জানান, মধ্যম তেলীগাতি, পশ্চিম তেলীগাতি, হরগাতি, হেড়মা ও মিস্ত্রী ডাঙ্গা গ্রামগুলোতেই শ্রমজীবি মানুষের বসবাস, পঞ্চকরণ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার জানান, খারইখালী, দেবরাজ ও পঞ্চকরণ গ্রামের দিনমজুর মানুষের একমাত্র আয়ের উপার্জন বন্ধ হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে, হোগলাবুনিয়া ইউনিয়ন চেয়ারমান মো. আকরামুজ্জামান জানান, গুয়াবাড়িয়া, বদনিভাঙ্গা ও হোগলাবুনিয়া গ্রামের দিনমজুরের সংখ্যা বেশী, খাউলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মাষ্টার আবুল খায়ের জানান, আমতলী, কুমারখালী, খেজুরবাড়িয়া, সন্ন্যাসী পশুরবুনিয়া, খাউলিয়া ও বড়পরী গ্রামে দৈনিক আয়ের মানুষের বসবাস বেশী, বারইখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান লাল জানান, বারইখালী, ভরাঘাটা, তেঁতুলবাড়িয়া, শেখপাড়ার, জাইল্লাঘাটার গ্রামগুলোতে বেশীরভাগ মানুষ নি¤œআয়ের, মোরেলগঞ্জ সদর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ আলী জানান, গাবতলা, কাঠালতলা, ভাইজোড়া, বিশারীঘাটা, পশ্চিম সরালিয়ার গ্রামে দিনমজুর শ্রেনী মানুষের সংখ্যা বেশী। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান বলেন, করোনা ভাইরাসে সরকারিভাবে এ উপজেলায় ইতোমধ্যে ১৪ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্ধ এসেছে। সোমবার থেকে এ বরাদ্ধ ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া হবে। #