লোহাগড়ায় কৃষ্ণচূড়া গাছের রঙিন ফুল নববর্ষকে আরও রাঙিয়ে তুলেছে
কাজী আশরাফ, লোহাগড়া(নড়াইল) : ‘সেই কৃষ্ণচূড়ার গাছ আজও মরেনি, মরেছে মনের যত আশা’- মনিকিশোরের এই গানে কৃষ্ণচূড়া গাছের সাথে জড়িত অতীতের অনেক সুখময় স্মৃতি ফুটে উঠেছে। “গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়ায় সময়ের শিহরণ, গ্রীষ্মের খরতাপে রক্তিম জাগরণ”। গ্রীষ্ম এসেছে এ কী শুধু গরম আর খরতাপ দিয়েই উপলব্ধি করার বিষয়। একদমই না। গাছে গাছে রক্তিম জাগরণে কৃষ্ণচূড়া ফুলও যে গ্রীষ্মের সৌন্দর্য বার্তার উপমা।
নগর জীবনের কর্মব্যস্তাতায় হয়তো শিরদাঁড়া উচু করে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়াকে পাশ কাটিয়ে গেছেন অনেকে। কিন্তু এক পলক দৃষ্টিতে যারা দেখেছেন রক্ত রাঙা একঝাঁক কৃষ্ণচূড়া ফুটে উঠতে; তারা কেবলই হয়েছেন পুলকিত। পুলক ছড়িয়েছে, ছড়াবে মনে প্রাণে। নতুন বছরে নতুন করে রাঙিয়ে যেতে কৃষ্ণচূড়ার সাজে মন সাজালে ক্ষতি কি? এতো কৃষ্ণচূড়ার ফুলে মুগ্ধ দৃষ্টি দেওয়ার দিন। মেঘলা আকাশ কিংবা মেঘমুক্ত। গাছের মগডালে জেগে ওঠা কৃষ্ণচূড়ার জুড়ি নেই বটে। সেই সঙ্গে যদি হালকা বাতাসের দোল খাওয়া দৃষ্টি চোখের কোণে আটকায় তাহলে উপভোগে বাদ যায়না কিছু। আর যদি দেখা না হয়ে থাকে, সময়ের ব্যস্ততায় কিংবা চোখ এড়ানোর ফলে, তবে সুযোগ তো রয়েছেই। সৌভাগ্যক্রমে নড়াইলের লোহাগড়ায় বিভিন্ন এলাকায় এ ফুলটির গাছ এখনও টিকে রয়েছে। আমাদের দেশে মূলত দুই ধরনের কৃষ্ণচূড়া ফুল ফুটতে দেখা যায়। একটি আগুনের মত উজ্জল লাল, অন্যটি লাল ও সামান্য হলুদ। তবে লাল কৃষ্ণচুড়ার প্রাচুর্যই বেশি চোখে পড়ে। লাল হলদেটে রংয়ের কৃষ্ণচুড়া বর্তমানে বেশ বিরল। কৃষ্ণচূড়া গ্রীষ্মের অতি পরিচিত একটি ফুল। বাঙালীর কবিতা, সাহিত্য, গান ও বিভিন্ন উপমায় কৃষ্ণচূড়া ফুলের কথা নানা ভঙ্গিমায় উঠে এসেছে। শোভাবর্ধনকারী এ বৃক্ষটি দেশের গ্রাম-বংলার পাশপাশি এখনও তার নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে কোনক্রমে টিকে আছে লোহাগড়া ছোট্ট শহরের পথে প্রান্তরে। কৃষ্ণচূড়ার আদি নিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাষ্কায়। ভিনদেশী এ ফুলের বৃক্ষগুলো আমাদের দেশে এসে নতুন নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। ধারণা করা হয় রাধা ও কৃষ্ণের নাম মিলিয়ে এ বৃক্ষের নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া। এর বড় খ্যাতি হলো গ্রীষ্মে যখন এই ফুল ফোটে, এর রূপে মুগ্ধ হয়ে ব্যস্ত পথচারীও থমকে তাকাতে বাধ্য হন।