ভোট নিয়ে সংসদ উত্তপ্ত-হট্টগোল, বিএনপির ওয়াক আউট
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের বক্তব্যে উত্তপ্ত জাতীয় সংসদ। ভোট সুষ্ঠু নিয়ে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুন অর রশিদের বক্তব্য দিয়ে চরম হট্টগোলও দেখা দেয়। হারুনকে বক্তব্য দিতে না দেয়ার প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে বিএনপির সংসদ সদস্যরা। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) মাগরিবের নামাজের বিরতির পর সংসদ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুন উর রশিদ। তিনি ‘গণতন্ত্রের’ স্বার্থে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘আসলেই কি নির্বাচন হবে? এতে কি জনগণ ভোট দিতে পারবে? এ নির্বাচনের পরিবেশ কি সরকার নিশ্চিত করতে পারবে? এ বিষয়ে দায়িত্বশীলদের থেকে উত্তর পেতে চাই। এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ এবং নির্বাচনকে নিয়ে যে সহিংসতা চলছে তা বন্ধের দাবি করছি। না করলে আমরা সংসদ থেকে ওয়াকআউট করবো।’তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘নির্বাচন কী আসলে হবে নাকি নির্বাচনের নামে এভাবে প্রহসন চলতে থাকবে তার জবাব চাই। আমাদের নির্বাচনি মিছিল থেকে লোক ধরে বলা হবে ছিনতাইকারী, দেওয়া হবে গায়েবি মামলা। এটা কত দিন চলবে?’
তিনি বলেন, ‘আপনারা আইন করে আপনারাই তা লঙ্ঘন করছেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাচ্ছেন। সিনিয়র এমপি মন্ত্রীরা যদি পুলিশ প্রশাসনকে কিছু বলেন তার বাইরে কী তারা (পুলিশ) যেতে পারেন? অসম্ভব।’
হারুনুর রশীদের বক্তব্যের পর সরকার দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমু ফ্লোর নিয়ে তার পাল্টা জবাব দেন।
তোফায়েল আহমেদ পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘যতক্ষণ বিএনপি নির্বাচনে না জেতেন ততক্ষণ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। নিরপেক্ষ হয়েছে বলেই চট্টগ্রামে ভোট কম পড়েছে। আওয়ামী লীগ প্রভাব বিস্তার করলে সেখানে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে পারতো। সেটা তো করেনি। এই আওয়ামী লীগের আমলেই বিএনপি ৫টি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল। বিজয়ী না হলে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না- এই স্লোগান ছিল বিএনপির মুখে মুখে।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সিটি করপারেশনে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চান বলে উল্লেখ করে তোফায়েল বলেন, ‘আমাদের মুজিববর্ষ শুরু হয়েছে। আমাদের সিদ্ধান্ত হলো সব জায়গায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে সভা পালন করবো। আমরা ঢাকা সিটিতে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মুজিববর্ষের সভা করবো। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বক্তব্য দেবো। রাজনৈতিক বক্তব্য দেবো। কিন্তু আমরা প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইবো না।’
আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপির সব সময় নেগেটিভ নির্বাচন ও নেগেটিভ পলিটিক্স করে আসছে। তারা ক্ষমতায় আসার জন্য অন্যপথ অবলম্বনের চেষ্টা করে। তারা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে। এর মধ্য দিয়ে তারা রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে রাজনৈতিক অপশক্তির ওপর আশ্রয় করে। রাজনীতি বিরোধী হিসেবেই তাদের জন্ম।
তোফায়েল ও আমুর ফোর ফ্লোর নিয়ে সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দেন তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীও। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, ‘বলেছে ধর্মসভা করা যাবে না। আমি কাল থেকে মিলাদ মাহফিল করবো। প্রার্থীর জন্য দোয়া করবো। দেখি কে ঠেকায়?’তাদের এই বক্তব্যের জবাব দিতে ফ্লোর চান হারুন অর রশিদ। কিন্তু স্পিকার তা নাকচ করে দেন। এরপরও মাইক ছাড়াই বক্তব্য দিতে শুরু করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এই সংসদ সদস্য। এসময় সংসদ উত্তপ্ত ও হট্টগোল শুরু হয়। বক্তব্যে বাধা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বাহিরে গিয়ে সরকার দলীয় এমপিরা বক্তব্য দেয়ায় হারুনের নেতৃত্বে ওয়াকআউট করেন বিএনপির সংসদ সদস্যরা।