আওয়ামী লীগকে অনেক ‘অপবাদ’ দেয়া হয়েছে, ‘ধ্বংস’ করা যায়নি: প্রধানমন্ত্রী
অপরাধ তথ্যচিত্র ডেক্স: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে বহু অপবাদ দেয়া হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীদের অনেক অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু কোনও জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়নে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা যায়নি।’ শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের নতুন কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর প্রস্তুতি নিয়ে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নতি হয়- মানুষের এই আস্থা ও বিশ্বাস আমরা অর্জন করতে পেরেছি বলেই বারবার মানুষের সমর্থন পেয়েছি।’ আশির দশকের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘১৯৮১ সালে দলের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। তখনও এই চিন্তা মাথায় ছিল না যে, আমাকে কোনও কিছু হতে হবে বা পেতে। শুধু দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যেতে চেয়েছি। দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করা, আজকে সেটা আমরা করতে পেরেছি। সেই উন্নয়ন গোটা বিশ্বে আজ স্বীকৃতি পেয়েছে।’ আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ দেখিয়ে দিয়েছে, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। আওয়ামী লীগকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। দল শক্তিশালী থাকলে সেটা সরকারের বড় শক্তি। সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও আজ সংঘবদ্ধ।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হত না, এটাই বাস্তবতা। ২০২০ সাল বাংলাদেশের জন্য অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবছরই জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী। ১৯২০ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার জন্ম না হলে এ বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না, এটাই বাস্তবতা। দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই তারা ২০০৮ সালে আমাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় নির্বাচিত করেছে, আমরা সরকারে আসতে পেরেছি। তাই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা নিয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি।’ সরকার প্রধান বলেন, ‘পাশাপাশি ২০২১ সাল আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করার সুযোগ পেয়েছি সেজন্যও আমি দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস না থাকলে আমরা জাতির পিতার জন্ম শতবার্ষিকী রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করার সুযোগ পেতাম না। আওয়ামীলীগের ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস ওতপ্রোতভাবে জড়িত।’ আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ বেচে দেবে, মসজিদে উলুধ্বনি দেবে এ ধরনের নানান অপপ্রচার করা হয়েছিল। এই অপপ্রচার মোকাবেলা করা তখন কঠিন কাজ ছিল। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে তৃণমূল নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ধরে রেখেছে। এটা করতে গিয়ে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে; কত যে নির্যাতনের ইতিহাস সেটা হিসাব করে বলা যাবে না।’ সূচনা বক্তব্যে আজকের যৌথসভা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সভায় শোক প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে অনুষ্ঠিত হবে মুলতবি সভা। আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।